চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

নতুন নোট কেনাবেচায় ভাটা

ইমরান বিন ছবুর 

১১ মে, ২০২১ | ১২:০৮ অপরাহ্ণ

ঈদে সালাম করেই সেলামির জন্য হাত পেতে দেয় বাচ্চারা। দিতে হবে একেবারে নতুন নোট। পুরাতন টাকা হলে অনেক বাচ্চা নিতেই চায় না। ঈদে সালামি হিসেবে নতুন টাকা দিতে হবে। তাই ঈদের পাঁচদিন বাকি থাকতেই নতুন টাকার জন্য এসেছেন পাথরঘাটার আব্দুল হালিম। ঈদের জামাতের পর ছোটদের সালামি হিসেবে নতুন টাকা দেওয়ার একটি রেওয়াজ চালু আছে দীর্ঘদিন ধরে। আব্দুল হালিমের মত অনেকেই নতুন টাকার জন্য নগরীর নিউ মার্কেটের সামনে ভিড় করছেন। তবে এখন নতুন নোট কেনাবেচায় আগের মত নেই বলে জানান এখানকার নোট ব্যবসায়ীরা।

নতুন নোট কিনতে আসা আব্দুল হালিম বলেন, প্রতি বছর তো কিছু নতুন টাকা নিয়ে যাই। ঈদের দিন বাচ্চাদের দিতে হয়। কোন কোন বাচ্চা তো সালাম করেই বলে, নতুন টাকা দেন। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন বাসায় আসে, তাদের হাতে নতুন টাকার নোট তুলে দিলে খুশি হয়। এছাড়াও মা-বাবা ও মুরব্বিদের হাতের কিছু নতুন নোট দিই। তাই প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও নতুন টাকার জন্য এসেছি।

তবে বিগত বছরগুলোতে ৮-১০ হাজার টাকার নতুন নোট নিলেও এ বছর মাত্র চার হাজার টাকার নতুন নোট নিয়েছেন বলে জানান তিনি। ব্যাংক থেকে না নিয়ে বেশি দামে কেন নোট কিনছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আগে আসলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেই নতুন টাকা নিয়ে যেতাম। করোনার গত বছর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাউন্টারে নতুন নোট দেয়া বন্ধ রেখেছে। তাই বাধ্য হয়েই এখান থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছি। দুইটি ১০ টাকার বান্ডিল ও একটি ২০ টাকার বান্ডিলে মোট চার হাজার টাকার নতুন নোট নিতে বাড়তি ৪৫০ টাকা দিতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

একাধিক নোট ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় ১০ জন ও কোতোয়ালী মোড় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পাঁচ জনের মত নোট ব্যবসায়ী রয়েছে। এসব ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন স্টাফ ও অফিসার থেকে নতুন টাকা সংগ্রহ করেন। তবে নতুন টাকা সংগ্রহ করতে এসব স্টাফ ও অফিসারদের কমিশন দিতে হয়। অন্যদিকে, করোনার কারণে নতুন নোট কেনাবেচায় ভাটা পড়েছে। কিছু কিছু লোকজন এসে ভিড় করলেও বেশিরভাগ লোক দেখেই চলে যায়। হাতেগোনা কয়েকজন মাত্র নতুন নোট কিনে। ১৯৮৬ সাল থেকে নগরীর নিউ মার্কেটের (বিপনী বিতান) সামনে নোটের ব্যবসা করছেন মো. কামাল (৬০)। প্রায় ৩৫ বছর ধরেই তিনি সেখানে ব্যবসা করছেন।

কথা হলে তিনি দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, করোনার জন্য রমজানেও তেমন ব্যবসা হচ্ছে না। তবে ২০ রমজানের পর থেকে কিছু কিছু লোক নতুন টাকার জন্য আসছে। করোনার কারণে গতবছরও কোন ব্যবসা করতে পারিনি। গ্রাহক আসে কিন্তু সবাই তো নতুন টাকা নিয়ে যায় না। অনেকেই দাম জিজ্ঞেস করেই চলে যায়। মো. নুর ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ছোট টাকার নোটই এখানে বেশি চলে।

এরমধ্যে ১০ ও ২০ টাকার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ১০ টাকার ১০০টি নতুন নোট নেয়ার জন্য বাড়তি ১৭০ টাকা দিতে হয়। ২০ টাকার ১০০টি নতুন নোটের জন্য দিতে হয় ১৫০ টাকা। একইভাবে ৫০ টাকার নোটের জন্য ২০০ টাকা এবং ১০০ টাকার নোটের জন্য ২০০-৩০০ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত বছরগুলো কাউন্টারে সাধারণের জন্য নতুন নোট সরবরাহ করা হত। কিন্ত করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ন্যায় এবছর কাউন্টারে নতুন নোট দেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট