চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মালামাল ছিনতাই করতে জোড়া খুন, গ্রেপ্তার ২ যুবক

নিজস্ব প্রতিবেদক

৮ মে, ২০২১ | ৮:৫৪ অপরাহ্ণ

কাভার্ডভ্যানের মালামাল ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ এলাকায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে চালক রিয়াদ হোসেন সাগর ও হেলপার মো. রিয়াদকে হত্যা করা হয়েছে।

শনিবার (৮ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের ডিসি ফারুক উল হক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ মাস ধরে অনুসন্ধান, গোয়েন্দা তৎপরতা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যার সঙ্গে জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা প্রাথমিকভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. মিরাজ হাওলাদার (৩০) ও আবু সুফিয়ান সুজন (২১)।

ডিসি ফারুক উল হক জানান, গত বছর ৩ অক্টোবর সকালে বন্দর থানার বড়পোল মনসুর মার্কেটের সামনে একটি কাভার্ডভ্যান পরিত্যক্ত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে। এ সময় ক্যাবিনের ভিতরে সিটসহ বিভিন্ন জায়গায় রক্তমাখা ছিল। পরবর্তীতে ৪ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টার্মিনালের পূর্বপাশে নির্মাণাধীন নতুন পতেঙ্গা লিংক রোডে ডোবার মধ্যে কাভার্ডভ্যানের চালক মো. রিয়াদ হোসেন সাগরের বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করে হালিশহর থানা পুলিশ। ৩ অক্টোবর জোরারগঞ্জ থানার দক্ষিণ সোনাপাহাড় ওমেগা গ্যাস কোম্পানি এলাকা থেকে একটি অজ্ঞাতনামা মরদেহ জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ উদ্ধার করে। এসব ঘটনায় হালিশহর ও জোরারগঞ্জ থানায় পৃথক দুইটি মামলা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানায়, পরিচিত ড্রাইভার ঢাকায় মালামাল নেয়ার সময় কাভার্ডভ্যানের মালামাল ছিনতাই করবে এমন পরিকল্পনা করে মিরাজ, সুজন ও বাবু। পরিকল্পনা মোতাবেক সুজন ও বাবু নগরীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে দুটি টিপ ছোরা কিনে। মৃত কাভার্ডভ্যান চালক রিয়াদ মেশিনারিজ পণ্য নিয়ে ঢাকায় যাবে সুজন ও বাবুকে এমন তথ্য দেয় মিরাজ। পরে ২ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় সিটি গেট এলাকা থেকে কাভার্ডভ্যানে ওঠে মিরাজ, সুজন ও বাবু। পরবর্তীতে চালক ও হেলপার জোরারগঞ্জে কমলদা নামক হোটেলে ভাত খেতে গেলে মারার পরিকল্পনা করে মিরাজ, সুজন ও বাবু। খাওয়ার সময় গাড়ি চালক ও হেলপার মিরাজকে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেন। এরপর মিরাজ গাড়ি চালাতে থাকে। নাহার এগ্রো পার হওয়ার পর সুজন ও বাবু নামের আরেকজন একসঙ্গে মিলে গাড়িচালক রিয়াদ ও হেলপার মো.আলীকে গাড়ির কেবিনের পিছনে ছোরা দিয়ে হত্যা করে।

পরিদর্শক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, হত্যা করার পর বিএসআরএম রডের ডিপো থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে আবার চট্টগ্রামে আসতে থাকে আসামিরা। জোরারগঞ্জ থানা এলাকায় এমেগা গ্যাস কোম্পানির পাশে হেলপারকে রাস্তার পাশে ডোবায় ফেলে দেয়। এসময় হেলপারের বাঁচার চেষ্টা দেখে আসামি বাবু হাতে থাকা ছোরা দিয়ে পানিতে নেমে গলা কেটে হেলপারের মৃত্যু নিশ্চিত করে।

কাভার্ডভ্যানের ভিতরে চালককে মুখ থেতলে দিয়ে বায়েজিদ লিংক রোডে মরদেহ ফেলার চেষ্টা করে আসামিরা। সেখানে গাড়ির চাপ থাকায় কাভার্ডভ্যানটি ঘুরে পতেঙ্গা আউটার লিংক রোডের হালিশহর এলাকায় রাস্তার পাশে চালকের মরদেহ পানিতে ফেলে দিয়ে চলে যায়। গাড়ির তেল শেষ হওয়ায় এবং কেবিনে রক্ত থাকায় মালামালসহ কাভার্ডভ্যান বড়পুল মনসুর মার্কেটে ফেলে যায় আসামিরা।

পূর্বকোণ/পিআর/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট