চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নিলামযোগ্য কন্টেইনারের চাপে বন্দর

সারোয়ার আহমদ 

৮ মে, ২০২১ | ৩:২৭ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে নিলামযোগ্য কনটেইনারের সংখ্যা। এসব কনটেইনার এখন বন্দরের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব কনটেইনারের কারণে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমে বেগ পেতে হচ্ছে। করোনার লকডাউন ও রমজানের কারণে একদিকে পণ্য খালাস হচ্ছে কম, অন্যদিকে খালাস না নেওয়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে নিলামযোগ্য কনটেইনার। এমন পরিস্থিতি সামলাতে এখন বেসামাল অবস্থা চট্টগ্রাম বন্দরের।

জানা যায়, গত ৪ মে পর্যন্ত বন্দরের অভ্যন্তরে নিলামযোগ্য এফসিএল (ফুল কনটেইনার লোডেড) কনটেইনার ছিল ৪ হাজার ৭৫২ বক্স (৭ হাজার ২৮১ টিইইউস)। যা বন্দরের মোট ধারণ ক্ষমতার প্রায় ১৫ শতাংশ। এসব কনটেইনারের মধ্যে আবার নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যবাহী হিমায়িত কনটেইনার আছে ১৯৮ বক্স (৩৮৭ টিইইউস)।

জানা গেছে, আমদানিকৃত পণ্য সময়মত খালাস না নেওয়ায় বন্দরের অভ্যন্তরে এমন নিলামযোগ্য কনটেইনারের সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। নিয়মানুযায়ী জাহাজ থেকে কনটেইনার বন্দরের অভ্যন্তরে নামানোর ৩০ দিনের মধ্যে খালাস নিতে হয়। অন্যথায় ওই কনটেইনার নিলামযোগ্য হিসেবে গণনা করা হয়।

এদিকে, নিলামযোগ্য কনটেইনারের চাপ সামলাতে বসে নেই চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনের মধ্যেও চলেছে নিলামযোগ্য কনটেইনারের এসেসমেন্ট। ওইসব কনটেইনার নিয়ে চলতি মে মাসেই তিনটি নিলাম ডাকা হয়েছে। এর মধ্যে একটি নিলাম (নিলাম নম্বর-৭) সম্পন্ন হলো গত ৬ মে। পরবর্তী ৮ নম্বর নিলাম আগামী ১১ মে এবং ৯ নম্বর নিলাম ২৫ মে নির্ধারণ করে দিনক্ষণ ঠিক করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের নিলাম শাখার সহকারী কমিশনার মো. আল-আমিন পূর্বকোণকে বলেন, কাস্টমস হাউসের নিলাম কার্যক্রম একটি রুটিন কাজ। একটি নিলাম পুরোপুরি শেষ করতে অনেকগুলো ধাপ পার করতে হয়। অনেক সময় আমদানিকারক আদালতের আশ্রয় নেন। এতে ওই কনটেইনার নিলামে তুলতে বছর পর্যন্ত গড়ায়। এসবের মধ্যেই কনটেইনারের পণ্য এসেসমেন্ট করে কি পণ্য, কতটুকু, কোন অবস্থায় আছে তার ইনভেন্ট্রি করতে হয়। পরে বাজার মূল্য বিবেচনায় নিলাম কমিটি পণ্যের সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করে নিলামে তোলে। আবার নিলামে পণ্য বিক্রি না হয়ে একই পণ্য একাধিকবার নিলামে তুলতে হয়। কোন পণ্য অবিক্রিত থাকলে শেষ পর্যন্ত সেটি পণ্য ধ্বংসের পর্যায়ে চলে যায়। এসব চলমান কাজের মধ্যেই আবার অন্যান্য আমদানিকারকেরা তাদের পণ্য খালাস না করলে নতুন করে নিলামযোগ্য কনটেইনার বাড়ে। তাই এসব রুটিন কাজ কাস্টমসকে প্রতিনিয়ত করতে হয়।

আল-আমিন বলেন, লকডাউনের মধ্যেও আমাদের নিলামের কাজ চলমান ছিল। চলতি মে মাসেই তিনটি নিলাম ডাকা হয়েছে। এসব নিলামেও বন্দরের অনেক কনটেইনার খালি হওয়ার আশা রাখি।

এদিকে, বন্দরে নিলামযোগ্য কনটেইনারের চাপ প্রসঙ্গে বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক পূর্বকোণকে বলেন, বন্দরে নিলামযোগ্য কনটেইনার পড়ে থাকলে অন্যান্য কনটেইনার মুভমেন্ট করতে সমস্যা হয়। এতে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। ওই সব কনটেইনার বন্দরের অনেক জায়গাও দখল করে রাখে। তাই বন্দরে কনটেইনার চাপ কমাতে নিলামযোগ্য কনটেইনারের সুরাহা করা অত্যন্ত জরুরি।

বন্দর সচিব বলেন, কাস্টমসকে গত ৪ মে বন্দরের অভ্যন্তরে থাকা ৭ হাজার ২৮১ টিইইউস নিলামযোগ্য কনটেইনারের তালিকা পাঠানো হয়েছে। তারা এসব কনটেইনার সরানোর কাজ দ্রুত করলে বন্দরের আমদানি-রপ্তনি কাজে সহায়ক হবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট