চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রাম বন্দর: বড় জাহাজ ভিড়ায় বাধা তিন শর্ত

সারোয়ার আহমদ 

৫ মে, ২০২১ | ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ায় ১৮৫ মিটার দৈর্ঘের চেয়ে বড় জাহাজ জেটিতে ভিড়াতে ফিডার অপারেটরদের নির্দেশনা দেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বন্দরেরই তিন শর্ত এখন বড় জাহাজ ভেড়ানোর কাজে বাধা সৃষ্টি করছে। এতে বিড়ম্বনায় পড়েছে ফিডার অপারেটরেরা।

জানা যায়, বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ৩ মার্চ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে বৈঠক করে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গত ১৫ মার্চ বন্দর কর্তৃপক্ষ স্টেকহোল্ডারদের চিঠি দিয়ে জানায় বন্দরের জেটিতে ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৯.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বার্থ নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। তাই ফিডার অপারেটরগণ পর্যায়ক্রমে বর্তমানে পরিচালিত ছোট জাহাজ (১৮৫ মিটারের কম) ফেস আউট করে ১৮৫ মিটারের চেয়ে বড় দৈর্ঘ্যরে জাহাজ পরিচালনা করবেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বাধা হিসেবে কাজ করছে বন্দর আরোপিত তিনটি শর্ত।

ওইসব শর্ত অনুযায়ী বন্দরের জেটিতে ১৯০ মিটার জাহাজ ভিড়াতে বন্দরকে ফিডার অপারেটরদের ৩শ টাকার স্ট্যাম্পে দুর্ঘটনার দায়ভার ও ক্ষয়-ক্ষতি বহন করবে এমন আগাম অঙ্গীকারনামা দিতে হয়। যার ফলে ফিডার অপারেটরগণ বড় জাহাজ বন্দরে আনতে নিরুৎসাহী হচ্ছেন বলে জানা যায়।

এছাড়া, বর্তমানে যেখানে ১৮৫ মিটারের জাহাজ পণ্য বহন করে জেটিতে ভিড়াতে কোন শর্ত থাকছে না, সেখানে ১৯০ মিটারের জাহাজ ভিড়ানোর সময় পণ্যবাহী জাহাজের ড্রাফট ৯ মিটারে সীমাবদ্ধ রাখতে বলা হচ্ছে। এতে বড় জাহাজ ভিড়ানোর কারণে বেশি পণ্য খালাস করতে পারবে এমন সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হবে ফিডার অপারেটরগণ। কারণ বড় জাহাজে বেশি পণ্য আনতে গেলে পণ্যবাহী জাহাজের ড্রাফট অনেক সময় ৯.৫ মিটারের চেয়েও বেশি হবে। তাই ওই শর্তের কারণে বড় হাজার জেটিতে ভিড়ানোর কাজে বিড়ম্বনায় পড়ছে ফিডার অপারেটরগণ।

এছাড়া, বড় জাহাজ ভিড়ার কাজে দুটি টাগবোট ব্যবহারের শর্তও রাখা হয়েছে। যা ফিডার অপারেটরদের খরচ বৃদ্ধির আরেকটি কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এসব শর্তের কারণে বড় জাহাজ জেটিতে ভিড়ানোর বিষয় পুনরায় পর্যালোচনা করছে শিপিং এজেন্টগণ। তাদের দাবি, বড় জাহাজ ভিড়তে এমন শর্ত বলবৎ থাকলে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম বাড়ানোর সুফল আসবে না। তাই শর্তগুলো পুনর্বিবেচনার দাবি শিপিং এজেন্টদের। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন।

তবে শর্তগুলো বড় জাহাজ ভিড়াতে বাধা সৃষ্টি করবে না উল্লেখ করে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, আমাদের সক্ষমতা বাড়ার পাশিপাশি বন্দরের নিরাপত্তার কথাও ভাবতে হয়। কোন কারণে জাহাজ দুর্ঘটনায় পড়লে এতে বন্দর তথা দেশের আমদানি-রপ্তানি কাজেই ব্যাঘাত ঘটবে। আর যেসব শর্ত রয়েছে সেগুলো বড় জাহাজ পরিচালনা করতে হয়তো শিথিলও করা হতে পারে। এটি পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে বলে জানান বন্দরের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট