চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

লকডাউনে প্রতিদিন রেলের ক্ষতি ২৫ লাখ টাকা

মিজানুর রহমান 

২২ এপ্রিল, ২০২১ | ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধের নির্দেশনা দেয় সরকার। এই নির্দেশনা মেনে ওই দিন থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। রেলের আয়ের অন্যতম বড় উৎস যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে সরকারি এই সংস্থাটি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে দিনে ৯টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনের টিকিট বিক্রি করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রতিদিন আয় হয় আনুমানিক ২৫ লাখ টাকা। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় গত ৫ এপ্রিল থেকে এ আয় বন্ধ হয়ে গেছে তাদের।

সূত্র জানায়- প্রতিদিন ঢাকাগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে ৮৯০টি সিটের বিপরীতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা, চট্টলা এক্সপ্রেসের ৫৭৭ সিটের বিপরীতে দুই লাখ টাকা, ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেসের ৬৬০ সিটের বিপরীতে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা, মহানগর গোধুলীতে ৭০৯ সিটের বিপরীতে তিন লাখ টাকা, সিলেটগামী পাহাড়িকা ট্রেনে ৬৪৮ সিটের বিপরীতে দুই লাখ ৩৫ হাজার টাকা আয় করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল।

এছাড়া ঢাকাগামী সোনার বাংলা ট্রেনে ৫৮৪ সিটের বিপরীতে সাড়ে তিন লাখ টাকা, মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ট্রেনে ৭৫১ সিটের বিপরীতে দুই লাখ ৩৫ হাজার টাকা, উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে ৬৩৩ সিটের বিপরীতে তিন লাখ টাকা ও তূর্ণা নিশিতা ট্রেনে ৬৬৮ সিটের বিপরীতে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল প্রতিদিন আয় করে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ২০১৯ সালে রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের আয় যেখানে ২৩২ কোটি ৬৭ লাখ ৭২ হাজার টাকা ছিলো সেখানে ২০২০ সালে করোনার বছরে আয় হয়েছে মাত্র ১৩৬ কোটি ১৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ২০২০ সালে এই অঞ্চলে রেলের আয় ঠেকেছে আগের বছরের প্রায় অর্ধেক। ক্ষতির পরিমাণ ৯৬ কোটি ৫২ লাখ ১৭ হাজার টাকা। এ বছরও এভাবে চলতে থাকলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে।

জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) আনসার আলী দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে আমাদের যেসব যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে তার সব আসন বিক্রি হলে আয় হয় ২৪-২৫ লাখ টাকা। অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়ে চলাচল করলে এই আয় ১০-১২ লাখ টাকায় নেমে আসে।

তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে ৩০ মার্চ থেকে আমরা অর্ধেক আসনের টিকিট বিক্রি শুরু করি। তবে ৫ এপ্রিল থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টিকিট বিক্রিও এখন বন্ধ রয়েছে। এ কারণে টিকিটি বিক্রি করে আমাদের যে আয় হতো তা- বন্ধ হয়ে গেছে।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়সহ সকল ক্ষেত্রে সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করাসহ ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে গত ২৯ মার্চ প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।

ওই প্রজ্ঞাপনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩০ মার্চ থেকে অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু করা হয়। তবে ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন শুরু হলে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে। এখন কঠোর লকডাউনেও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট