চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

মোগল আমলের কাজির মসজিদ গড়ে উঠছে আধুনিক স্থাপত্যে

সুকান্ত বিকাশ ধর, সাতকানিয়া

২১ এপ্রিল, ২০২১ | ১২:৪৬ অপরাহ্ণ

সাতকানিয়ার ঐতিহ্যবাহী একটি মসজিদের নাম কাজির মসজিদ। এ মসজিদটি শুধু সাতকানিয়া নয়, চট্টগ্রামে ইতিহাস-ঐতিহ্যবহনকারী যে মসজিদগুলো রয়েছে তার মধ্যে প্রাচীনতম একটি মসজিদ এটি। প্রায় ৩০০ বছরেরও অধিক পূর্বে  মোগল আমলে কাজি আতিউল্লাহ নামে এক বুজুর্গ ব্যক্তি এ মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। যা উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ কাঞ্চনা এলাকায় কালের সাক্ষী হয়ে যুগ যুগ ধরে আলোকবর্তিকার ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে। কাজি আতিউল্লাহ সাহেবের নামের আগের অংশ কাজি দিয়ে মসজিদের নামকরণ করা হয় ‘কাজির মসজিদ’ নামে।

বর্তমানে মসজিদটি নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার পাশাপাশি মুসলিম ছাড়াও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকের মাঝেও রয়েছে অগাধ বিশ্বাস। কালের বিবর্তনে পুরনো অবয়বের পরিবর্তন ঘটে নতুন কাঠামোতে নবরূপে নির্মিত হচ্ছে এ মসজিদটি। এলাকাবাসী জানান, মোগল আমলে মরহুম কাজি আতিউল্লাহ সাহেব নামে এক বুজুর্গ ব্যক্তি দক্ষিণ কাঞ্চনার ওই পাহাড়ের জঙ্গলে এসে মসজিদটি নির্মাণ করেন। প্রথমে মসজিদটি ছিল মাটির তৈরি। বর্তমানে বিপুল অর্থের বিনিময়ে কারুকাজের মধ্য দিয়ে নতুন করে তৈরি হচ্ছে মসজিদটি। যদিও অর্থাভাবে নির্মাণ কাজ ধীর গতিতে চলছে ।

এব্যাপারে মরহুম কাজি আতিউল্লাহর বংশধর মসজিদের মোতোয়াল্লি ও কোষাধ্যক্ষ কাজী শেখ আহমেদ বলেন, মরহুম কাজি আতিউল্লাহ সাহেব নামে এক ব্যক্তি  মোগল আমলে দক্ষিণ কাঞ্চনা পাহাড়ি এলাকার জঙ্গলে এসে মাটি ও ছনের ছাউনি দিয়ে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, ইসলাম প্রচারের নিদর্শন হিসেবে মসজিদটি তিনি নির্মাণ করেছিলেন। বিভিন্ন অলৌকিক কর্মকা- দেখে এলাকাবাসী তাঁকে বুজুর্গ হিসেবে মান্য করে আসছে।

শেখ আহমেদ বলেন,  মোগল সম্রাট ৮০ কানি জমি দান করেছিলেন আতিউল্লাহ সাহেবকে। জমিগুলোর মধ্যে সাড়ে ১০ কানিতে কবরস্থান, আড়াই কানিতে পুকুর ও উত্তর পাশে কয়েক গন্ডা জমির উপর রয়েছে মসজিদটি, উত্তর পাশে রয়েছে মাদ্রাসা ও এতিমখানা। অন্যান্য জায়গাগুলো তার বংশধর ও এলাকার লোকজন ভোগ করে আসছেন।

দিন দিন মুসল্লি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিগত ৭ বছর আগে দোতলা মসজিদটি ভেঙে তিন তলা বিশিষ্ট এ মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মসজিদটির নির্মাণে প্রায় ৬ কোটি টাকা প্রয়োজন। বর্তমানে ৪ কোটির উপরে খরচ হয়েছে। টাকার অভাবে কাজ করা যাচ্ছে না।

এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে একাধিক ব্যক্তি জানান, এ মসজিদে এক সময় গায়েবি আজান হতো। তবে, মানুষ ভয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যেতো না। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে দলবদ্ধ হয়ে স্থানীয় লোকজন মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়া শুরু করেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কাঞ্চনা ইউ.পি চেয়ারম্যান রমজান আলী বলেন, খুবই তাৎপর্যপূর্ণ এ মসজিদ। এ মসজিদ নিয়ে কেউ বেয়াদবি করলে তার সাথে সাথে শাস্তি হয়েছে এমন নজির রয়েছে। এ মসজিদে প্রতি জুমাবারে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসল্লিতে মসজিদ কানায় কানায় পূর্ণ থাকে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট