চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

বাঁশখালীতে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ: তদন্ত শুরু, শ্রমিকদের কাজে যোগদান

বাঁশখালী সংবাদদাতা

১৯ এপ্রিল, ২০২১ | ৭:১৯ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পুলিশ শ্রমিক সংঘর্ষের ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অপরদিকে কাজে যোগদান করেছেন নয় শতাধিক চায়না ও ৩ শতাধিক দেশীয় শ্রমিক।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

আগামীকাল মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) এস এস পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে পালিয়ে যাওয়া সকল শ্রমিক কাজে যোগদান করবেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চীফ কর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ।

এদিকে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তদন্ত কমিটি প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তার, চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী অভিজিৎকুরী, চট্টগ্রামের শিল্প কলকারখানা অধিদপ্তরের লেবার পরিদর্শক মাসুদ রানা, বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ারা (সার্কেল) হুমায়ন কবীর, লেবার বিভাগের কর্মকর্তা মি. শিপন, থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সফিউল কবীর।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তদন্ত টিমের প্রধান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তার বলেন, ঘটনার সময় যারা উপস্থিত ছিলেন এমন শ্রমিকদের সাথে ও মালিক পক্ষের লোকজনের সাথে কথা বলে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনায় তথ্য নিয়ে দ্রুত সময়ে এই রিপোর্ট প্রদান কর হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের পিএস মো. আকিজ উদ্দীন, এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তান বিল্লাহ আদিল, এস আলম গ্রুপের বিমল কান্তি মিত্র, আশিষ কুমার নাথসহ আরও অনেকে।

কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প কেন্দ্রের চীফ কর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ বলেন, পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয় কুচক্রী মহল প্রকল্পের কাটা তারের ঘেরা ও টিনের বেড়া ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

এ বিষয়ে দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের পিএস মো. আকিজউদ্দীন, এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তান বিল্লাহ আদিল বলেন, আমরা মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়েছি। সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ইতিমধ্যে ৩ শতাধিক শ্রমিক কাজে যোগদান করেছেন। আগামীকাল থেকে সকল শ্রমিকরা কাজে যোগদান করবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা সরকারি এই প্রকল্পের স্বার্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি এই প্রকল্প রক্ষা করার জন্য। এছাড়া উপকূল এলাকায় যে সমস্ত অবৈধ অস্ত্র রয়েছে তা উদ্ধারের প্রয়োজন রয়েছে।

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল কবির বলেন, পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদানের ঘটনার মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই হাজার থেকে আড়াই হাজারজনকে আসামি করা হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা, গাড়ি পোড়ানোসহ ২৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের চিফ কো–অর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১ হাজার ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। তবে দুই মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশ শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। শনিবারের ঘটনায় পুলিশ ও কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প কেন্দ্রের সমন্বয়ক ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছেন। এদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি সোমবার এবং জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি রবিবার ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।

পূর্বকোণ/মামুন/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট