চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

লকডাউনে পেশা পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ এপ্রিল, ২০২১ | ৫:০১ অপরাহ্ণ

চলমান লকডাউনের কারণে বন্ধ কাজ। এমন পরিস্থিতিতে সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে শ্রমজীবী মানুষ। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিশেহারা এ শ্রমিকরা পেশা পরিবর্তন করেছেন অনেকে। সবকিছু থমকে থাকলেও থমকে নেই পেটের ক্ষুধা। তাই এক সপ্তাহের লকডাউনে পরিবহন, হোটেল ও নির্মাণ শ্রমিকসহ অনেকেই তাদের পেশার পরিবর্তন করেছেন। পরিবহন, হোটেল ও নির্মাণ শ্রমিকদের অনেকে এখন রিকশা চালাতে শুরু করেছেন। শাহ আমানত সেতু এলাকায় পণ্যবাহী ভ্যান ঠেলতে দেখা গেছে অনেককে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভারী পণ্যবাহী তিনটা ভ্যান সেতুর মুখে পৌঁছাতেই পেছন থেকে কয়েকজন যুবক দৌঁড়ে আসেন। বলেন, ‘আমরা উঠাই দিতেছি’! ভ্যান চালক বলেন, ‘২০ টাকা করে দেব। পারলে তিন জন আয়’! কথাটি শুনে ফাহাদ, জাহাঙ্গীর ও ফারুক নামের তিন শ্রমিক মাথা নেড়ে সব শক্তি দিয়ে ভ্যানের পেছনে ঠেলতে শুরু করে। তাদের সহযোগিতায় মালবাহী ভ্যানটি চলে। ব্রিজের প্রায় মাঝ পর্যন্ত যায় তারা। আবার ফিরে আসেন আগের জায়গায়। এভাবে সারাদিন চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ থেকে আসা মালবাহী ভ্যান ও রিকশার জন্য অপেক্ষা করেন শ্রমিকরা। শুধু ফাহাদ, জাহাঙ্গীর কিংবা ফারুকই নয়, এ কাজের জন্য অপেক্ষা করেন তাদের মতো আরো কিছু শ্রমিক। নতুন ব্রিজ এলাকায় চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ থেকে আসা মালবাহী ভ্যানগুলো ব্রিজের উপরে উঠিয়ে দিলে ২০ টাকা করে আয় হয়। সারাদিন দুই-আড়াইশ টাকার মতো আয় হচ্ছে বলে জানায় এ শ্রমিকরা।

ফাহাদ বলেন, আমি চার নম্বর গাড়ির হেল্পার। আমি যার সাথে কাজ করতাম তার গাড়ি বন্ধ, তাই এ কাজে নেমেছি। জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা হোটেল শ্রমিক। খাতুনগঞ্জের একটা হোটেলের কারিগর। হোটেল বন্ধ হওয়ায় এখানে কাজ করতে এসেছি। প্রতিদিনের খাবার অন্ততপক্ষে জোগাড় হচ্ছে। পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে না।

নির্মাণ শ্রমিক রাকিব বলেন, ঘরে তার অসুস্থ মা। তার ওষুধের জন্য টাকা লাগবে। তাই বসে না থেকে এখানে কাজে চলে এসেছি।

আলমগীর পেশায় ছিলেন পরিবহন শ্রমিক। কিন্তু এখন পেশার পরিবর্তন করে রিকশা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, গাড়ি বন্ধ কিন্তু রিকশাতো চলছে। তাই আমি মানু কোম্পানি থেকে রিকশা নিয়ে কাজে বের হয়েছি। সংসারে মা-বাবা, বউ-সন্তান সবাই আছে। কাজ না করলে সবাই উপোস থাকতে হবে।

পূর্বকোণ/মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট