চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

মুখরোচক ইফতারি আয়োজন তবুও মিলছে না ক্রেতা

রাজীব রাহুল

১৬ এপ্রিল, ২০২১ | ২:৪৬ অপরাহ্ণ

করোনা সংক্রমণের কারণে হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে ইফতার করার আয়োজন নেই। খোলা রাখার সিদ্ধান্তে অন্যান্য বছরের মতো ইফতারিতে নানা পদের মুখরোচক খাবারের আয়োজন রয়েছে বেশির ভাগ হোটেলে। তারপরও লকডাউনের কারণে অনেকটা ক্রেতা-শূন্য অবস্থা। ইফতারি বেচাকেনায় সেই উৎসবমুখর পরিবেশ এখন আর নেই। তবে আশা দেখাচ্ছে, অনলাইনে ইফতারি-বিক্রির আয়োজন। মানুষ ঘরে থাকলেও অনলাইনে অর্ডার দিচ্ছে ইফতারিসামগ্রীর। গতকাল বৃহস্পতিবার রমজানের দ্বিতীয় দিনে নগরীর চকবাজার, ২ নম্বর গেট ও জিইসি মোড় ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

চকবাজার মোড়ের এরিস ফুডের ব্যবস্থাপক মো. আমির বলেন, করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও বিধি-নিষেধের কারণে ইফতারে শুধু পার্সেল নেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দোকানে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। তারপরও নিয়মিত ইফতারি আইটেম ছাড়াও মাটন চপ, চিকেন জালি কাবাব, স্পেশাল ফিরনি, চিকেন সামলিক, মাটন কবাব, মাটন কুপ্তা, চিকেন হালিম, মাটন হালিমের আয়োজন রয়েছে। তবে বিক্রি হচ্ছে খবুই সামান্য। কারণ ৬০ ভাগ মানুষ বাসায় তৈরি ইফতার করছে। লকডাউনে ঝুঁকি নিয়ে মানুষ ঘর থেকে রেব হচ্ছে না। তাদের মধ্যে আবার ১০ শতাংশ লোক অনলাইনে অর্ডার করছে। চকবাজারের সাদিয়াস কিচেন, ফুলকলি, মালঞ্চ, কুটুমবাড়ি, সবুজ হোটেল, জামানেও দেখা যায় একই চিত্র। বন্ধ রয়েছে কয়েকটি হোটেল-রেস্টুরেন্ট।

জিইসি মোড়ের অভিজাত কাজী রেস্টুরেন্টের সহকারী ব্যবস্থাপক আশরাফুল কায়সার বলেন, অন্যান্য বছর রমজানের মতো জমে উঠেনি এবারের ইফতারির বাজার। করোনার কঠোর লকডাউনে ৭০ শতাংশ ক্রেতা কমে গেছে। লকডাউনে অফিস-আদালত ও কল-কারখানা বন্ধ থাকায় কর্মজীবী মানুষ বাসায় ইফতার করছেন। যার প্রভাব পড়েছে ইফতারির বাজারে। অন্যান্য বছর আমরা ইফতারির পণ্য বিক্রি শেষে ক্রেতাদের ফিরিয়ে দিতাম, এখন অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে।

তিনি জানান, কাজী রেস্টুরেন্টে আমরা স্পেশাল মাটন হালিম বিক্রি করছি ৭শ টাকায়, বিফ হালিম ৬৫০ টাকা, চিকেন হালিম ৫৫০ টাকা, মেজবানি বিফ ৭ শ টাকা, মেজবানি চনার ডাল ৩শ টাকা, হোল গ্রিল চিকেন ৩৮০ টাকা, ফিরনি ৪০ টাকা, চিকেন শর্মা ১শ টাকা, শাহী জিলাপী কেজি ৩শ টাকা, চনা কেজি ২২০ টাকা, পিয়াজু-বেগুনি ১০ টাকা করে, তন্দুরি চিকেন পিস ১৩০ টাকা, আলু পরটা ৩০ টাকা দরে বিক্রি করছি।
জিইসির মোড়ের ঐতিহ্যবাহী কেন্ডি ও জিইসি মালঞ্চেও ইফতারি কেনাকাটায় ক্রেতাদের ভিড় ছিল না। অথচ রমজানে এই দুই প্রতিষ্ঠানের শাহী জিলাপী কিনতে মানুষের ভিড় থাকত। তবে জামান ও সাদিয়াস কিচেনে স্বল্প সংখ্যক ক্রেতা দেখা যায়।

২ নম্বর গেট ষোলশহর রেল গেট এলাকায় সেভেন ডেজ, কাচ্ছি ডেকচি বিরানি ও স্টার কাবাবের সামনে ভিড় দেখা যায়। তাও আবার অনলাইন ফুড ডেলিভারিম্যানদের। পাঠাও ফুড ডেলিভারিম্যান রুবেল জানান, লকডাউনে ইফতারের সময়ে অনলাইনে অডার্র পাচ্ছি দ্বিগুণ। লকডাউনে বেশিরভাগ মানুষ বাসায় অবস্থান করছে, যার কারণে অর্ডার বেড়েছে।
সেভেন ডেজের মালিক রাব্বি বলেন, রমজান উপলক্ষে বাসমতি চালের মাটন কাচ্চি ১৭৬ টাকা, বাসমতি চালের চিকেন দম বিরিয়ানি ১৩৬ টাকা, মেজবানি বিফ আখনি ১২৬ টাকা, মাটন তেহেরি ১৭৬ টাকা, চিকেন চাপ ৯১ টাকা, বাটার নান ২০ টাকা, বোরহানি লিটার ১৪০ টাকায় বিক্রি করছি। তবে দোকানে বিক্রির চেয়ে অনলাইনে অর্ডার বেশি পাচ্ছি।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বলেন, ‘আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত পর্যন্ত নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। এই কয়েক দিনে এক শ’র কাছাকাছি হোটেল-রেস্টুরেন্টকে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জরিমানা করা হয়েছে।’

 

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট