চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রস্তুত পিডিবি, প্রস্তুত ওয়াসা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ এপ্রিল, ২০২১ | ১২:৩২ অপরাহ্ণ

পবিত্র রমজানে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, মনিটরিং ও সুষম লোড বণ্টন নিশ্চিত করার মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ বিতরণের সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয় করে রোস্টার দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলে এবার রমজানে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। সেহরি, ইফতার ও তারাবির সময় কোনো লোডশেডিং থাকবে না। অন্যদিকে ওয়াসার কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, আগের চেয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার রমজানে নগরীতে ওয়াসার পানি সরবরাহ নিয়ে গ্রাহকরা সমস্যায় পড়বেন না। এরপরও যেখানে সমস্যা দেখা দেবে সেখানে তাৎক্ষণিক সমাধানে কাজ করবে সেবা সংস্থাটি।

রমজানে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ: পিডিবি

পবিত্র রমজান মাসে চট্টগ্রামে প্রায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। গতকাল মঙ্গলবার বিদ্যুৎ বিতরণ দক্ষিণাঞ্চল কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘রমজানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ’ সংক্রান্ত এক মনিটরিং সভায় এই তথ্য জানান বিতরণ দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান সামিনা বানু। সভায় পবিত্র রমজান মাসে সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিতরণ দক্ষিণাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রিড অনুসারে কার্যপরিধি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা মনিটরিং ও সুষম লোড বণ্টন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয় করে রোস্টার দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দিয়ে সভায় প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান সামিনা বানু বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেও বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলসভাবে কাজ করছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে আমাদের অনেক সহকর্মী মৃত্যুবরণ করলেও আমরা দায়িত্ব পালন অব্যাহত রেখেছি। তিনি বলেন, জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার প্রায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও বৈরি আবহাওয়া, যান্ত্রিক ত্রুটি, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নগর উন্নয়ন কর্মকা-ের জন্য এ অঞ্চলে দিনে অতি সামান্য পরিমাণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। এ কারণে গ্রাহকদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আশা করি রমজানে- বিশেষ করে সেহরি, ইফতার ও তারাবির সময় কোনো লোডশেডিং থাকবে না।

বিতরণ দক্ষিণাঞ্চলের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. সহিদুল ইসলাম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আজ বুধবার থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের মধ্যেও কাজ করবেন। তাই পবিত্র রমজানের প্রথম দিন থেকেই চট্টগ্রামে চাহিদার প্রায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটবে না।

সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে ওয়াসার নিজস্ব টিম

আগের চেয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার রমজানে নগরীতে ওয়াসার পানি সরবরাহ নিয়ে গ্রাহকরা সমস্যায় পড়বে না বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এরপর যেখানে সমস্যা দেখা দিবে সেখানে তাৎক্ষণিক সমাধানে কাজ করবে সেবা সংস্থাটি। এর ব্যত্যয় হলে পানিবাহী ভাউজার নিয়ে হাজির হবে ওয়াসার নিজস্ব টিম।

সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ গতকাল মঙ্গলবার দৈনিক পূর্বকোণকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রমজানে নগরীতে পানি সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে ওয়াসার ৪টি কন্ট্রোল রুম ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। এসব কন্ট্রোল রুমে গ্রাহকদের নিকট হতে প্রাপ্ত অভিযোগ গ্রহণ এবং তাৎক্ষণিকভাবে নিজস্ব টিম গিয়ে সমাধানে কাজ করবে। তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যা সমাধান করতে না পারলে ওই এলাকায় বিনামূল্যে পানি সরবরাহ করা হবে। এসব সেবার মধ্যে মসজিদও রয়েছে।’

ওয়াসা সূত্র জানায়, পানি সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগ গ্রহণ ও তাৎক্ষণিক সমাধানের লক্ষ্যে আগ্রাবাদ, মেহেদিবাগ, কালুরঘাট ও জুবিলি রোড এলাকায় ৪টি কন্ট্রোল রুম খুলেছে। কন্ট্রোল রুমগুলো হলো- মড-১ এর কার্যালয় (আগ্রাবাদ) ২৫২৫২৫২, ৭২৪৮৭৫, মড-২ এর কার্যালয় (মেহেদিবাগ) ৬১৬৫৯২, মড-৩ এর কার্যালয় (কালুরঘাট) ০২৪১৩৮৮০০৬ এবং মড-৪ এর কার্যালয় (জুবিলি রোড) ৬১৬৭৬৮।

সূত্র জানায়, নগরীতে পানির চাহিদা দৈনিক প্রায় ৫০ কোটি লিটার। ওয়াসা সরবরাহ দিচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ কোটি লিটার। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘বর্তমানে নগরীতে পানির তেমন সংকট নেই। রাঙ্গুনিয়াস্থ শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প-২ থেকেও প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ কোটি লিটার পানি পাওয়া যাচ্ছে। যদিও এটির উৎপাদন ক্ষমতা ১৪ কোটি লিটার। কিন্তু পুরনো পাইপলাইনে পানির বেশি প্রেসার দেয়া যাচ্ছে না। প্রেসার দিলে ফেটে যাচ্ছে পাইপ। এই কারণে এই প্রকল্পের ১৪ কোটি লিটার পানি একসাথে নগরীতে সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বর্তমানে এসব পুরাতন পাইপের সমস্যা সমাধানের কাজ চলছে।’

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট