চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

গ্রাহকের পানির রিডিং চলে যাবে ওয়াসার সার্ভারে

মোহাম্মদ আলী

২৬ জুন, ২০১৯ | ২:১৭ পূর্বাহ্ণ

জিপিআরএস মডিউল যুক্ত মিটার ব্যবহারের দিকে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। প্রথম পর্যায়ে ২২০টি মিটার আমদানি করে গ্রাহক সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। এটির সুফল পাওয়া গেলে পর্যায়ক্রমে ওয়াসার সকল গ্রাহককে এ মিটার সংযোগ দেওয়া হবে। এ মিটারে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও গ্রাহকের ব্যবহৃত পানির রিডিং মডিউলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ওয়াসার সার্ভারে চলে যাবে। মিটার ইন্সপেক্টকদের গ্রাহকের কাছে গিয়ে রিডিং সংগ্রহ করতে হবে না।
ওয়াসা সূত্র জানায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম ওয়াসার গ্রাহকরা মেকানিক্যাল মিটার ব্যবহার করে থাকে। এসব মিটার চীন, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। ওয়াসার প্রায় ৭৪ হাজার গ্রাহক এ ধরণের মিটার ব্যবহার করে আসছে। গ্রাহকের কাছে গিয়ে এসব মিটার থেকে প্রতি মাসে ব্যবহৃত রিডিং সংগ্রহ করে বিল করে ওয়াসার রাজস্ব বিভাগের ইন্সপেক্টররা। কোনো কারণে মিটার ইন্সপেক্টর ঘটনাস্থলে না গেলে গড় বিল করার প্রবণতা থাকে বেশি। এমনকি এসব মিটার চুরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। এ নিয়ে গ্রাহকের মধ্যে প্রায়শঃ অসন্তোষ দেখা দেয়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ওয়াসা জিপিআরএস মডিউল যুক্ত মিটার ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য প্রথম পর্যায়ে তুরস্ক থেকে ২২০টি জিপিআরএস মডিউল যুক্ত মিটার আমদানি করে পরীক্ষামূলকভাবে গ্রাহকদের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। গত মে মাস থেকে এ মিটার সংযোগ দিয়ে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। তাতে সুফল পাওয়া গেলে পর্যায়ক্রমে সব গ্রাহককে এ মিটার সংযোগ দেওয়া হবে বলে ওয়াসা সূত্র জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার ক্রয় শাখার সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘গ্রাহকদের মিটার সংক্রান্ত ভোগান্তি লাঘবের লক্ষ্যে টেকসই মিটারিং ব্যবস্থা চালুর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। উন্নত দেশে যে ধরণের মিটারিং ব্যবস্থা চালু আছে, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও পারিপাশির্^ক সীমাবদ্ধতার কারণে চট্টগ্রাম ওয়াসা সেই ধরনের ব্যবস্থা চালু করতে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তারপরও চট্টগ্রাম ওয়াসা মিটারিং ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে পরীক্ষামূলকভাবে তুরস্ক থেকে ২২০টি জিপিআরএস মডিউল যুক্ত মিটার ক্রয় করে। প্রাথমিকভাবে ২০১৮-১৯ আর্থিক সালে শুধুমাত্র বাল্ক সাইজের (৪ ইঞ্চি, ৬ ইঞ্চি ও ৮ ইঞ্চি) জিপিআরএস মডিউল যুক্ত মিটার ক্রয় করা হয়।’
মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন বলেন, এ মিটার মূলত দুইটি অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশটি বর্তমানে প্রচলিত মাল্টি জেট ড্রাই টাইপ মেকানিক্যাল মিটার অংশ; যার মধ্যদিয়ে সংযোগের পানি প্রবাহিত হয়। দ্বিতীয় অংশটি হচ্ছে জিপিআরএস মডিউল। যার মাধ্যমে মিটারের ব্যবহৃত পানির রিডিং মডিউলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ওয়াসার সার্ভারে চলে আসে।’
জিপিআরএস মডিউল যুক্ত মিটার প্রসঙ্গে ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাকসুদ আলম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘জিপিআরএস মডিউল মিটারের সুবিধাগুলো হচ্ছে, সরাসরি ডাটা বেজে রিডিং পাওয়া যায়। এটির পরিচালন ব্যয় কম এবং প্রতি ২৪ ঘণ্টায় সঠিক রিডিং পাওয়া যায়। তাতে গ্রাহক ভোগান্তি কম থাকে। এছাড়াও সংযোগস্থলের লিকেজ সনাক্ত, মিটার চুরি ও অচল হলে তাৎক্ষণিক তথ্য পাওয়া যাবে।’
প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাকসুদ আলম বলেন, ‘জিপিআরএস মডিউল একটি ক্যাবলের মাধ্যমে সরাসরি মিটারের সাথে সংযুক্ত থাকে। যার দ্বারা মিটারে ব্যবহৃত ইউনিট রিডিং ক্যাবলের মাধ্যমে জিপিআরএস মডিউলে সরবরাহ হয়। জিপিআরএস মডিউলে যেকোন মোবাইল অপারেটরের একটি সীম সংযুক্ত করা হয়। উক্ত সীমের মাধ্যমে মডিউলে প্রাপ্ত রিডিং চট্টগ্রাম ওয়াসার সার্ভারে চলে আসবে। প্রতি ২৪ ঘণ্টা পরপর মিটার থেকে সার্ভারে রিডিং পাওয়া যায়। এতে প্রতি সীমের জন্য মাসিক প্রায় ৬০ এমবি পরিমাণ ডাটা খরচ হয়। জিপিআরএস মডিউলে একটি ডিসপ্লে থাকে। যার মাধ্যমে মিটারের রিডিং এবং অন্যান্য তথ্য সরাসরি দেখা যায়। মডিউলে ৩ দশমিক ৬ ভোল্টের লিথিয়াম ব্যাটারি থাকে। এটির লাইফ টাইম রয়েছে ১০ বছর।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট