চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরী: উৎপাদনে যাচ্ছে আগামী মাসেই

ইমরান বিন ছবুর 

৯ এপ্রিল, ২০২১ | ১২:১৫ অপরাহ্ণ

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর উৎপাদনে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) মিরসরাই শিল্পনগরী। আগামী একমাসের মধ্যে এই শিল্প নগরীর তিনটি ইউনিট পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যাবে। উৎপাদনে যাওয়ার জন্য ইউনিটগুলো মূল কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছেন

বিসিক চট্টগ্রামের উপ-মহাব্যবস্থাপক আহমেদ জামাল নাসের চৌধুরী। উৎপাদনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ইউনিটগুলো হচ্ছে- এম এ জলিল খানের খান এক্সেসোরিজ, নাসির উদ্দিনের নাসির ক্যামিকেল এবং শাহাব উদ্দিনের খাজা খান্ডার।

বিসিক সূত্রে জানা যায়, মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরীতে ১৫ দশমিক ৩২ একর আয়তনের ৮৮টি প্লট রয়েছে। তিন ক্যাটাগরিতে এসব প্লট ভাগ করা হয়েছে। এরমধ্যে এ-টাইপ প্লট ২৭টি, বি-টাইপ ৩৩টি ও সি-টাইপ প্লট ২৮টি। অন্যদিকে, প্লট বরাদ্দ কমিটির সভায় হালকা প্রকৌশল খাত, খাদ্য ও খাদ্যজাত, রেডিমেড গার্মেন্টস খাত, সিরামিকস ও নন-মেটালিক, কেমিক্যাল এন্ড এলাইড, প্যাকেজিং, কাঠ ও বনজ এবং বিবিধ খাতে এসব প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্লটগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্যের উৎপাদন শুরু করতে ইতোমধ্যে কাজ করে চলছে। অন্যদিকে, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেছে বিসিক।

জানতে চাইলে বিসিক চট্টগ্রামের উপ-মহাব্যবস্থাপক আহমেদ জামাল নাসের চৌধুরী বলেন, মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরীতে ৮৫ জন উদ্দ্যোক্তাকে মোট ৮৮টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এই ৮৮ প্লটের মধ্যে ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর ৮২ জনকে এবং গতবছরের ২৫ আগস্ট তিনজনকে ৬টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে ডাউন পেমেন্ট না করায় সেখান থেকে ১৪টি প্লট বাতিল করা হয়। ইতোমধ্যে ১৪টি প্লট পুনরায় বরাদ্দ দেয়ার জন্য ৫০টি আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমন কমলে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে প্লট বরাদ্দ কমিটি মাধ্যমে পুনরায় বাতিল হওয়া প্লট বরাদ্দ দেয়া হবে।

তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে বরাদ্দকৃত প্লটের মধ্যে ৪৯টি শিল্প ইউনিট লে-আউট প্ল্যান বিসিক কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। ৯টি শিল্প ইউনিটের কাজ চলমান রয়েছে এবং আগামী মাসের মধ্যে তিনটি ইউনিট পরীক্ষামূল উৎপাদনে যাবে। এই শিল্প নগরী পুরোপুরি চালু হবে সেখানে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে খাজা ভান্ডার (চালের মিল) ইউনিটের মালিক শাহাব উদ্দিন বলেন, মিলের আনুসাঙ্গিক সব কাজ শেষ। এখন মিলে মেশিন বসানো হবে। মেশিন বসানো শেষ হলেই শীঘ্রই আমরা উৎপাদনে যাবো।

করোনার কারণে বিলম্ব হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আরো অনেক আগে মিলের উৎপাদনে যেতে পারতাম। করোনার কারণে শ্রমিকরা ঠিক মত কাজ করতে পারেনি। দু’দিন কাজ করে তিনদিন কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে।

জানতে চাইলে বিসিকের (মিরসরাই) স্টেট অফিসার মো. তানজিলুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সুবিধার কারণে মিরসরাই বিসিক শিল্প নগরীর প্লট নিতে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। শিল্প এলাকাটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাছে হওয়ায় পণ্য উৎপাদনের পর দ্রুত সময়ের নির্ধারিত স্থানে পৌঁছানের সুযোগ রয়েছে। আগামী একমাসের মধ্যে এই শিল্প নগরীর তিনটি ইউনিট পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যাবে। এছাড়া, আরো ৯টি শিল্প ইউনিটের কাজ চলমান রয়েছে।

জানা যায়, ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর মিরসরাই উপজেলা সফরকালে এ অঞ্চলে একটি পৃথক শিল্পপার্ক নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২২ কোটি ৯৪ লাখ টাকায় মিরসরাইয়ে শিল্পনগরী স্থাপনে একটি প্রকল্প হাতে নেয় বিসিক। পরবর্তীতে প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে হয় ২৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয় ১ জুলাই ২০১০ থেকে জুন ২০১৭ পর্যন্ত।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট