চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

করোনায় আশার আলো দেখিয়েছে শামসুল হক ফাউন্ডেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক 

৮ মার্চ, ২০২১ | ৩:৫৩ অপরাহ্ণ

মহামারী করোনার দুঃসময়ে যেসব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানবতার সেবায় অনেকটা নীরবে- নিভৃতে মানুষের সহযোগিতা করে যাচ্ছে সেরকম একটি সংগঠনের নাম আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন। শুধু করোনাকাল নয়, দীর্ঘদিন ধরে এই সংগঠন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের সেবাধর্মী কাজ এখনও অব্যাহত আছে। সংগঠনটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দীন জানান, লকডাউনে স্বল্প আয়ের মানুষের আয় যখন বন্ধ হয়ে যায় তখন অসহায় মানুষের জন্য চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শুরু করে আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন। লকডাউনের প্রথম দিকে এই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে চান্দগাঁও থানাধীন ৭শ পরিবারকে (প্রতি সপ্তাহে) বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম শহরের যে কোন জায়গা থেকে ফাউন্ডেশনের নির্দিষ্ট নম্বরে কল বা মেসেঞ্জারে ইনবক্স করলে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পৌঁছে দেওয়া হয় উপহারসামগ্রী।

ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আরও যেসব সেবা প্রদান করা হয় তার মধ্যে ছিল এম্বুলেন্স সার্ভিস। করোনার প্রথমদিকে সংক্রমণের ভয়ে যখন কেনো এম্বুলেন্স জ্বর বা সর্দি কাশির রোগী নিতে চায়নি তখন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ফেসবুকে এম্বুলেন্স সেবার ঘোষণা দেয়া হয়। ফলশ্রুতিতে অনেক লাশ/রোগী নির্দিষ্টস্থানে ফাউন্ডেশনের এম্বুলেন্সের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। টেলিমেডিসিন সেবাও ছিল ফাউন্ডেশনের অন্যতম একটি সেবা। এ সবো দেয়ার জন্য ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে নিয়োগ দেয়া হয় দু’জন ডেডিকেটেড ডাক্তার। যারা সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে গেছেন।

করোনার শুরুতে যখন পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রীর অভাবে স্বাস্থ্যকর্মীরা সেবা দিতে অপারগতা প্রকাশ করছিলেন ঠিক সেই সময়েই উন্নতমানের পিপিই নিয়ে হাজির হয় আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন। একইসাথে নিজস্ব তত্ত্বাববধানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগিতায় তৈরি করে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। পরে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার মাস্ক, হাজারও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও পিপিই চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ফাউন্ডেশনের প্রশংসিত আরেকটি কাজ হল হোম সার্ভিস নার্সিং সেবা। করোনাকালে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হোম সার্ভিস নার্সিং সেবা। নির্দিষ্ট নম্বরে কল করলেই গ্র্যাজুয়েট নার্স সংশ্লিষ্ট বাসায় গিয়ে প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে এসেছেন।

করোনাকালীন কঠিন সময়ে শুরু হয় হ্যালো হসপিটাল। প্রতিদিন ডাক্তারি সেবা। সপ্তাহে সাতদিন সাতজন ডাক্তার এখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। হ্যালো হসপিটালের রেফারেন্সে গরীব রোগীদের সিজার অপারেশন ও চোখের ছানি অপারেশন করা হচ্ছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।

করোনার মধ্যে গত ১৫ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে মেহমান খানা। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়া বিনামূল্যের এই খাবার প্রোগ্রামে প্রতিদিন পেটভরে ভাত খাচ্ছেন অনেক অসহায় দিনমজুর, শ্রমিক ও পথশিশু। প্রতিদিন প্রায় ২০০ জনের এই খাবার আয়োজনের প্রোগ্রাম ইতোমধ্যে ২০০তম দিন অতিক্তম করে অদ্যাবধি চলমান রয়েছে।

ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম শহরে আগত স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য ‘মুসাফির খানা’ নামে বিনামূল্যে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা করা হয়। চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম শহরে আসা রোগী, চাকরির ইন্টারভিউ দিতে আসা ও ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা এই মুসাফির খানা থেকে উপকৃত হচ্ছেন।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট