চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

নাজিরহাটে পাক বর্বরতা

সাক্ষী ‘ওরা ১১ জন শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’

এস এম মোরশেদ মুন্না, নাজিরহাট

৭ মার্চ, ২০২১ | ১:১২ অপরাহ্ণ

নাজিরহাট বাসস্ট্যান্ডের ওরা ১১ জন শহীদ স্মৃতিস্তম্ভটি দাঁড়িয়ে আছে পাক হানাদারদের বর্বরতার সাক্ষী হয়ে। সেদিনের ঘটনা বিবরণীতে জানা গেছে, ১৯৭১ এর ৮ ডিসেম্বর সকালে হানাদার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে সেই রাতেই নাজিরহাট ত্যাগ করে হাটহাজারীস্থ অদুদিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করে। ৯ ডিসেম্বর সকালে নাজিরহাট হানাদারমুক্ত হয়।

এদিন বিকেলে তারা (হানাদার) তাদের দোসর রাজাকার-আল শামস বাহিনীর সহযোগিতায় শক্তি বৃদ্ধি করে পুনরায় নাজিরহাট আক্রমণ করে। সেদিন ৩টি বাসে করে হানাদাররা নাজিরহাটে আসে। মূলত পাবলিক বাসকে সামনে দিয়ে পিছনের দুটি বাসে করে হানাদাররা কৌশলে নাজিরহাটে প্রবেশ করে।

সে সময়ে বাসস্ট্যান্ডে মুক্তিযোদ্ধারা সাধারণ মানুষদের নিয়ে বিজয়ের উল্লাস করছিলেন। বাস তিনটি বাসস্ট্যান্ডে প্রবেশ করেই এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে মুক্তিযোদ্ধাসহ ১১ জন শহীদ হন। এই শহীদগণ হলেন শহীদ সিপাহী মানিক মিয়া (চট্টগ্রাম) ও শহীদ ফোরক আহমদ, শহীদ তোফাজ্জল হোসেন (বরিশাল), শহীদ সিপাহী অলি আহমদ (খুলনা), শহীদ সিপাহী নূরুল হুদা (কুমিল্লা), শহীদ সিপাহী মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম (সন্দ্বীপ), স্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে ফরহাদাবাদ গ্রামের শহীদ হাসিনা খাতুন, শহীদ আবুল মিয়া, শহীদ মুজিবুল হক, শহীদ নূরুল আবছার ও অজ্ঞাতপরিচয় একজন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘটনাস্থলে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের এক সাথে সমাহিত করা হয়।

ওইদিনের হামলার পাল্টা জবাবও দেন এদেশের দামাল ছেলেরা (মুক্তিবাহিনী)। ফটিকছড়ি-হাটহাজারীর মুক্তিযোদ্ধারা মিত্রবাহিনীকে সাথে নিয়ে টানা চারদিন হানাদারের লক্ষ্যবস্তুর উপর যৌথ আক্রমণ করেন। ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর হানাদাররা নাজিরহাট ত্যাগ করে। ১৪ ডিসেম্বর নাজিরহাট হানাদারমুক্ত হয়।

উল্লেখ্য ২০১০-২০১১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করে নাজিরহাটস্থ ওরা ১১ জন স্মৃতি স্তম্ভটি পুনঃসংস্কার করে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট