চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

চাক্তাই খালের পশ্চিম পাড় আবারো অবৈধ দখলে

ইফতেখারুল ইসলাম 

৫ মার্চ, ২০২১ | ১২:১০ অপরাহ্ণ

মিয়াখান নগর পুল হতে হামিদ উল্লাহ খান বাজার হয়ে চাক্তাই প্রথম পুল পর্যন্ত চাক্তাই খালের পশ্চিম পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিল এক এগারোর সরকার। দীর্ঘ এক যুগেও তা সরাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যেকারণে খাল পাড়ের রাস্তাটিও আর হয়নি। বরং সেখানে নতুন করে গড়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা।

সরেজমিন পরিদর্শন এবং ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, চাক্তাই খাল পাড়ে কখনো রাস্তা ছিল না। সেনাশাসিত এক এগারোর সরকার আসার পর চাক্তাই খাল এবং রাজাখালী খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে। সেসময় স্থানীয় কাউন্সিলরকে সাথে নিয়ে অবৈধ খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে তৎকালীন প্রশাসন। তারই অংশ হিসেবে মিয়াখান নগর পুল থেকে হামিদ উল্লাহ খান বাজার হয়ে চাক্তাই প্রথম পুল পর্যন্ত চাক্তাই খালের পশ্চিম পাড়ে সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল। প্রায় পৌণে এক কিলোমিটার দূরত্বের ১৬ ফুট প্রশস্ত সড়ক নির্মাণের জন্য অধিকাংশ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। ওইসময় বকসিরহাট ওয়ার্ড কার্যালয়ের একাংশও ভাঙা হয়। সময়ের অভাবে হামিদ উল্লাহ খান বাজারের পর কয়েকটি ভবনের অংশ ভাঙতে পারেনি।

এক এগারোর সরকার চলে যাওয়ায় ওইসব ভবনের অংশ আর উচ্ছেদ করা হয়নি। এমনকি ভাঙা অংশগুলোও পরিষ্কার করা হয়নি। একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এক এগারোর সরকারের আমলে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু খাল পাড় থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে এই বাণিজ্য কেন্দ্রের যানবাহনের গতি বাড়াতে খাল পাড়ে সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ সবার প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এক এগারোর সরকার চলে যাওয়ার পর খালের পাড়ে সড়ক নির্মাণের কাজ আর এগোয়নি। এটা দুর্ভাগ্যজনক।

জানতে চাইলে তৎকালীন কাউন্সিলর মুহাম্মদ জামাল হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, প্রশাসনের সহযোগিতায় সেসময় তিনি উপস্থিত থেকে খাল পাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিলেন। ওইসময় রাজাখালী খালের পাড়ে রাজাখালী এক্সেস রোড নির্মিত হয়। চালপট্টির পশ্চিম পাশে চাক্তাই খালের পূর্বপাশে চামড়ার গুদাম পর্যন্ত সড়কটি এবং মিয়াখান নগর হতে ফুলতলা পর্যন্ত সড়ক নির্মিত হয়। উচ্ছেদের পর ২০০৯-২০১০ সালে এসব সড়ক নির্মিত হয়। ওইসময় শাহ আমানত সেতুর আগে কল্পলোক সংলগ্ন রাজাখালী খালের কিছু অবৈধ অংশ উচ্ছেদ করা যায়নি। ওই অংশটি বড়জোর প্রায় ১০০ মিটার। একইভাবে মিয়াখান নগর পুল হতে হামিদ উল্লাহ খান বাজার হয়ে চাক্তাই প্রথম পুল পর্যন্ত চাক্তাই খালের পশ্চিম পাড়ের কিছু অংশ সময়ের অভাবে ভাঙতে পারেনি তৎকালীন প্রশাসন। কারণ ওই সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর তিনিও আর কাউন্সিলর নির্বাচন করেননি। তবে কয়েকটি অবৈধ স্থাপনার কিছু অংশ ভেঙে সহজেই নতুন একটি রাস্তা নির্মাণ করা যেত। রাস্তা তো নির্মাণ হয়নি।

বরং বকসিরহাট ওয়ার্ড অফিসের ঘেঁষে চায়ের দোকান দেয়া হয়েছে। সেখানে একটি গণশৌচাগার ছিল। সেটিও আর নির্মাণ করা হয়নি। তিনি জানান,  তিনি কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেছেন ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত। তার আমলে ২০১০ সালে মিয়া খান সেতু নির্মিত হয়। ২০০৯ সালে খাতুনগঞ্জ ফুলতলা ব্রিজ নতুনভাবে নির্মিত হয়। ২০০৬ সালে মধ্যম চাকতাই ভাঙ্গা লোহারপুল ভেঙ্গে নতুন ব্রিজ নির্মিত হয়। চাকতাই ভাঙ্গাপুল নির্মিত হয় ২০০৮ সালে। মিয়া নগর হতে ফুলতলা খালের পাড়ে নতুন সড়ক ও ব্রিজ নির্মিত হয় ২০০৯ সালে। রাজাখালের পাশে নির্মিত নতুন এক্সেস রোডের দৈর্ঘ্য প্রায় দেড় কিলোমিটার। এছাড়া মেরিনার্স রোডটি নির্মিত হয় বন্দরের জায়গায়।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট