চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সূর্যমুখীর সৌন্দর্য্যে হাসে হাটহাজারীর কৃষি মাঠ

হাটহাজারী সংবাদদাতা

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ৭:৩৫ অপরাহ্ণ

হাটহাজারীতে আলো ছড়াচ্ছে  আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের এক একর জমিজুড়ে চাষ করা সূর্যমুখী ফুলের বাগান। সম্প্রতি সূর্যমুখী ফুলের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হলে এই দৃশ্য দেখতে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বাগানে  প্রতিদিন বিভিন্ন উপজেলার মানুষ ভিড় করছেন । তাদের কেউ কেউ এই দৃষ্টিকাড়া ফুলের মাঠে ঢুকে সেলফি, কেউবা স্বজন নিয়ে  ছবি তুলছেন। সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও এলাকার লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে সেখানে ছুটে যাচ্ছেন। কেউ যেন ফুল না ছেড়ে সেজন্য সেখানে অতিরিক্ত লোক নিয়োগ করতে হয়েছে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে।

গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন শত শত মানুষের এই অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে সূর্যমুখী ফুলের ক্ষতি হচ্ছে। হাটহাজারী উপজেলা ছাড়াও ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম শহর থেকেও মানুষ মাইক্রোবাস, কার, মোটরসাইকেলে করে ছুটে আসছে। কেউ কেউ পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে আসছেন। এই লোকজনকে সামলাতে কাহিল হতে হচ্ছে গবেষণা কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মচারীদের। অনেকেই গাছ ভেঙে জমির মাঝে চলে যাচ্ছে ছবি তুলতে। তাতে গাছের ক্ষতি হলো কি না দেখছে না।

ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে স্বামী সন্তান নিয়ে ছবি তুলতে আসা গৃহবধু হাসিনা আক্তার বলেন, ফেসবুকে ফুলের দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে ছবি তুলতে এসেছি। কারণ উত্তর চট্টগ্রামে এমন পরিবেশ আর কোথাও নেই। স্ব-বান্ধবে ছবি তুলতে আসা রাশেদ বলেন, এমন মাঠজুড়ে সূর্যমুখী ফুল আর কখনো দেখিনি। স্মৃতিতে ধরে রাখতে এখানে ছবি তুলতে এসেছি প্রিয়জনদের নিয়ে। এখানে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের দায়িত্ব রত গার্ড মো. বেলাল হোসেন জানান, ফুল ফোটার পর ফেসবুকে ভাইরাল হলে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। এরপর থেকে কাউকে আটকানো যাচ্ছে না। জমির চার পাশে জাল দিয়ে ঘেরা দেওয়ার পরও মানুষ ভেতরে প্রবেশ করছে।

আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়,দেশে তেলের ঘাটতি মেটাতে ব্যাপকভাবে সূর্যমুখী চাষের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরও লক্ষ্যে বারি-৩ জাতের নতুন সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে ব্যাপক আবাদের মাধ্যমে দেশের ভোজ্যতেলের ঘাটতি মেটাবে। এবার দ্বিতীয়বারের মতো হাটহাজারী আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র বারি-৩ জাতের সূর্যমুখী চাষের আবাদ হচ্ছে। এই জাতের প্রতি একর আবাদে ৫ কেজি বীজ লাগে। হাটহাজারীর মত সারাদেশে ফরিদপুর, মেহেরপুর ও পাবনায় ডাল ও তৈলবীজ উৎপাদন কেন্দ্রের তিনটি খামারেই এখন এই বারি-৩ জাতের বীজের চাষ করা হয়েছে। এবার আমাদের এখানে বীজ পাওয়ার পর তা হাটহাজারী উপজেলার কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

হাটহাজারী আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. খলিলুর রহমান ভূঁইয়া জানান, দ্বিতীয়বারের মতো বীজের জন্য খামারে প্রতি বছরই কমবেশি সুর্যমূখীর চাষ করা হয়। এবার এক একর জমিতে চাষ করা হয়েছে। মাঠজুড়ে ফুলে ভরে যাওয়াতে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখন সব শ্রেণির মানুষ ছবি তোলার জন্য ভিড় করছে। মানুষের উপস্থিতি ভালো লাগছে। কিন্তু কিছু নারী-পুরুষ গাছ দুমড়ে-মুচড়ে ভেতরে গিয়ে ছবি তুলছে যা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গার্ড দিয়েও জমির মাঝে যাওয়া ঠেকানো যাচ্ছে না। তিনি আগত দর্শনার্থীদের বাগানের ভিতরে গিয়ে ছবি না তোলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

পূর্বকোণ / আরআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট