চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নেই কোন গণশৌচাগার

ইফতেখারুল ইসলাম 

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

চাক্তাই খাতুনগঞ্জের প্রতিটি অলিগলিতে দিনরাত কাজ করেন হাজারো শ্রমিক। শ্রমিক নির্ভর পাঁচ হাজারের অধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন কাজ করেন ২০ সহস্রাধিক শ্রমিক। এছাড়া দূর-দুরান্ত থেকে পণ্য আনা-নেয়ার জন্য এখানে আসেন হাজারো চালক-সহকারী এবং ক্রেতা। কিন্তু এখানে কোন গণশৌচাগার নেই। নেই শ্রমিকদের এবং চালক-সহকারীদের বিশ্রামের কোন স্থান।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ সগির আহমদ, চট্টগ্রাম চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম, চট্টগ্রাম ডাল মিল ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আহমদ রশিদ আমুসহ একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে আলাপকালে তাঁরা এই বাণিজ্যক এলাকার গণশৌচাগারের প্রয়োজনীয়তার কথা পূর্বকোণের কাছে তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, এখানে যে পাঁচ হাজারের অধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার পণ্য উঠানামার জন্য শ্রমিকের কোন বিকল্প নেই। শ্রমিক, ক্রেতা, গাড়ি চালক-সহকারীসহ যারা নানা প্রয়োজনে এখানে প্রতিদিন আসেন তাদের সবাইকেই গণশৌচাগারের অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

সরেজমিন পরিদর্শন এবং ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই বাণিজ্যিক এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পাঁচটি স্থাপনা আছে। তার মধ্যে খাতুনগঞ্জ পোড়াভিটা ওয়ার্ড অফিস ও মার্কেট। ওয়ার্ড অফিসে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সেবা নিতে আসেন। মার্কেটে অন্তত ১৫টি দোকান রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন শতশত পাইকারি ও খুচরা ক্রেতা আসেন। অথচ এই মার্কেটটির যে অংশটি পাবলিক টয়লেটের জন্য জায়গা নির্ধারিত ছিল সেখানে কয়েক বছর আগে চায়ের দোকান নির্মাণ করা হয়। সিটি কর্পোরেশনের আরেকটি স্থাপনা হল হাজি কমিশনার মাহাবুব লেইন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আরবান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এখানেও সেবা নেয়ার জন্য সাধারণ মানুষ আসেন।

কিন্তু গণশৌচাগার নেই। আমিনুর রহমান রোডস্থ জুলেখা আমিনুর রহমান সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক সময়ে শিক্ষার্থীদের কোলাহলে পরিপূর্ণ থাকে। নানা প্রয়োজনে তাদের অভিভাবকরাও আসেন। কিন্তু কোন পাবলিক টয়লেট নেই। চাক্তাই ড্রামপট্টির একটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছিল গণশৌচাগারের জন্য। বিএনপি’র মেয়র মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের আমলে সেখানে গণশৌচাগার নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করা হয়েছিল। সেই জায়গাটি গুদাম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দেয়া হয়েছে। সেখানে আর গণশৌচাগার নির্মাণ করা হয়নি। কোরবানিগঞ্জ বদরখালের উপর মার্কেট নির্মাণ করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। জলাবদ্ধতা নিরসনে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে মেগা প্রকল্পের চলমান কাজ বাস্তবায়নে ওই মার্কেটের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়। সেখানেও নেই কোন গণশৌচাগার।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, খাতুনগঞ্জ-চাক্তাই এবং আশপাশের বাণিজ্যিক এলাকায় গণশৌচাগার না থাকার বিষয়টি তিনি নির্বাচনের আগে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন। তখন তিনি তাদেরকে আশ্বাস দেন। এই বাণিজ্যিক এলাকায় গণশৌচাগার নির্মাণের কথা চিন্তা করছেন উল্লেখ করে বলেন, ওই এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পর্যাপ্ত জায়গা আছে, যেখানে গণশৌচাগার নির্মাণ করা যাবে। এখন হয়তো দখল-বেদখল হয়ে পড়ে আছে উল্লেখ করে বলেন, সেখানে সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় গণশৌচাগার নির্মাণ করা হবে। একইসাথে দূর-দুরান্ত থেকে আসা চালক এবং সহকারীদের বিশ্রামাগারও নির্মাণ করা হবে। গণশৌচাগার না থাকার কারণে চালক-শ্রমিকরা এখন বড় ধরনের সমস্যায় পড়েন। আর যানবাহন চালকের জন্য বিশ্রামটা অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে পারলেই তারা নিরাপদভাবে গাড়ি চালাতে পারবেন।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের এস্টেট অফিসার কামরুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, ড্রামপট্টির জায়গাটি গণশৌচাগারের জন্যই নির্ধারিত। জায়গাটি কেউ ব্যবহার করলে তা অবৈধভাবেই করছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট