চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

যুগোপযোগী পরিবেশ হলোই না

ইফতেখারুল ইসলাম

২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ

সুদীর্ঘকাল থেকেই চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে দেশি-বিদেশি ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণা। এখনো আছে তবে আগের চেয়ে অনেক কম। এখানে রয়েছে অর্ধশতাধিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং পাঁচ হাজারের অধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। যারা আমদানি-রপ্তানি এবং পাইকারি ব্যবসায় জড়িত। তাদের নেতৃত্বে রয়েছে প্রায় অর্ধডজনের বেশি ব্যবসায়িক সংগঠন। কিন্তু সব সমিতির নেতৃবৃন্দ একসাথে বসার জন্য কোন কমিউিনিটি হল বা সেমিনার হল এখানে নেই। চট্টগ্রামের বাইরের বড় কোন ক্রেতাকে বসিয়ে  ব্যবসায়িক বিষয় উপস্থাপনের সুযোগও নেই।

ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যবসায়িক পরিবেশ গড়ে না উঠায় চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের জৌলুস দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। এতবড় একটি বাণিজ্যক এলাকা যেখানে দিনে হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়। অথচ এখানে কোন সেমিনার হল নেই। চট্টগ্রামের বাইরের বড় ক্রেতাদের আপ্যায়ন করার জন্য নেই কোন ভালমানের রেস্টুরেন্ট এবং আবাসিক হোটেল। ব্যবসায়ীরাও বিষয়টি বেশ ভালভাবেই অনুভব করছেন।

এই বাণিজ্যিক এলাকায় যেসব ব্যবসায়িক সংগঠন রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল খাতুনগঞ্জ ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন, চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার কল্যাণ সমিতি, চট্টগ্রাম ডাল মিল মালিক সমিতি, হামিদ উল্লাহ বাজার ব্যবসায়ী সমিতি, আছদগঞ্জ হার্ডওয়ার মার্চেন্ট এসোসিয়েশন, আছদগঞ্জ আয়রন এন্ড স্টিল ব্যবসায়ী সমিতি, আমির মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি, চাক্তাই শিল্প ও ব্যবসায়ী সমিতি, চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতি, চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতি, চট্টগ্রাম চট ও খালি বস্তা ব্যবসায়ী সমিতি, আছদগঞ্জ শুঁটকি ব্যবসায়ী সমিতি, চট্টগ্রাম শুঁটকি আড়তদার কল্যাণ সমিতি, চাক্তাই ট্রেড এন্ড ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন। দেশের প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যাংকের শাখাও এখানে রয়েছে। যেখানে দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়।

বক্সিরহাট ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ জামাল হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, ব্যবসায়ী সমিতির আন্তরিকতার অভাব যেমন রয়েছে, তেমনি প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষগুলোর পরিকল্পনার অভাবও রয়েছে। যেকারণে এখানে কোন সেমিনার হল গড়ে উঠেনি। গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করার জন্য এই বাণিজ্যিক এলাকার বাইরে যেতে হয়। এখানে শুধু সেমিনার হলের অভাব রয়েছে তা নয়।

এখানে ভালমানের রেস্টুরেন্টও নেই। নেই কোন আবাসিক হোটেলও। বাইরে থেকে কোন ব্যবসায়ী এই বাণিজ্য এলাকায় এলে এখানে রাতযাপন করতে পারেন না।

চট্টগ্রাম চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম পূর্বকোণকে বলেন, চট্টগ্রামকে যদি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয়, তাহলে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জসহ আশপাশের ব্যবসায়িক এলাকাকে বলতে হবে চট্টগ্রামের ব্যবসার প্রাণ। এখানে পাঁচ হাজারের অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। রয়েছে অনেক বড় বড় গ্রুপ অব কোম্পানির অফিসও। এখানে অতীত কাল থেকেই দেশি-বিদেশি ক্রেতা-বিক্রেতা আসে। কিন্তু এখানে কোন সেমিনার হল নেই। এতবড় একটি বাণিজ্যিক এলাকায় একটি আধুনিক সেমিনার হল থাকা উচিত। বর্তমানে বিভিন্ন সড়ক এবং এলাকার ব্যবসায়ীরা আলাদা সমিতি করে তাদের নিজ নিজ সমস্যার সমাধান করে। কিন্তু এই বাণিজ্যিক এলাকার এমন অনেক সমস্যা আছে যা কোন ব্যবসায়ী সমিতির একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। সব সমিতিকে যৌথভাবে বড় সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হয়। অথচ সব ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ একসাথে বসার কোন স্থান নেই।

চট্টগ্রাম ডাল মিল ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আহমদ রশিদ আমু পূর্বকোণকে বলেন, এই বাণিজ্যিক এলাকা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে গড়ে উঠছে না। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অনেক দূরের ব্যাপার। ব্যবসায়ীরা একসাথে বসার জায়গা পর্যন্ত নেই।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট