চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

নজর কাড়ছে মডেল মসজিদ

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন 

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ১২:১৪ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের ১৬ মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মধ্যে চারটির কাজ প্রায় শেষ। সরকারি অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে এসব মসজিদ। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে উদ্বোধনের তালিকায় রয়েছে এই চার মসজিদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১৭ মার্চ তা উদ্বোধনের কথা রয়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. সেলিম উদ্দিন পূর্বকোণকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশের ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন। এরমধ্যে চট্টগ্রামের চারটি রয়েছে। নগরীর কল্পলোক আবাসিক এলাকা ছাড়াও জেলার লোহাগাড়া, মীরসরাই ও সন্দ্বীপ উপজেলায় নির্মিতব্য মসজিদও উদ্বোধন করা হবে। এখন ফিনিশিং কাজ চলছে।’

চট্টগ্রামে ১৬টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এক একটি মসজিদে নারী-পুরুষ মিলে একসঙ্গে ৯ শ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। এছাড়াও থাকবে হেফজখানা, আইসিটি সেন্টার, লাইব্রেরি, দেশি-বিদেশি মেহমানখানা, রিচার্স সেন্টার, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মৃত ব্যক্তির গোসলের ব্যবস্থাসহ ১১টি সেবা পাবে মানুষ। মুসলমান ধর্মাবলম্বী ছাড়াও অন্য ধর্মের লোকজনও সেবা নিতে পারবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম জাকারিয়া বলেন, ‘মুজিব শত বর্ষের উপহার হিসেবে চট্টগ্রামের চারটি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে। এখন এসব মসজিদের শেষ ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে।’

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, নগরীর কল্পলোক আবাসিক এলাকায় সিডিএ’র দশমিক ৭২৬০ একর জায়গায় মসজিদ নির্মিত হচ্ছে। নির্মাণ কাজ ৬৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। এখন ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ কোটি টাকা। নগরীর এই মসজিদটি হচ্ছে চারতলা বিশিষ্ট। আর উপজেলা পর্যায়ে নির্মিত মসজিদগুলো হচ্ছে তিনতলা বিশিষ্ট। নির্মাণ ব্যয় হচ্ছে ১৬ কোটি টাকা।

দেখা যায়, লোহাগাড়ায় উপজেলা পরিষদের দশমিক ৪৫৮৮ একর জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। মিরসরাইয়ে জেলা পরিষদের জায়গায় নির্মিত মসজিদের ৮১ শতাংশ কাজ শেষ। জেলার সবকটি মসজিদের মধ্যে দ্রুত কাজ এগিয়ে এই মসজিদের। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘নির্মাণ কাজ প্রায় কাজ। এখন রঙয়ের কাজ চলছে।’ সন্দ্বীপ উপজেলা দান করা জায়গায় নির্মিত মসজিদের কাজ প্রায় শেষ।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ধর্মমন্ত্রী, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক, প্রকল্প কর্মকর্তাসহ কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন।

এছাড়াও সাতকানিয়া শাহী জামে মসজিদকে মডেল মসজিদ হিসেবে নির্মাণ করা হচ্ছে। ২২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পটিয়া হাজি আনোয়ার আলী জামে মসজিদ (ওয়াকফ) জায়গায় মসজিদ নির্মাণের কাজ ২২ শতাংশ শেষ হয়েছে।

১৬টি মসজিদের মধ্যে ছয়টির নির্মাণ কাজ এগিয়ে গেলেও অন্যগুলোর কাজ তেমন এগোয়নি। চন্দনাইশ, বাঁশখালী, কর্ণফুলী, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী উপজেলার নির্মাণ কাজ শুরুই হয়নি। ফটিকছড়ি ও হাটহাজারীতে মসজিদের জন্য বিকল্প প্রস্তাবনা এখনো ঝুলে রয়েছে।

২০১৮ সালে মডেল মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু প্রথম অবস্থায় অধিগ্রহণের অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল না। খাস বা ব্যক্তিমালিকাধীন দান করা জায়গায় মসজিদ নির্মাণের নির্দেশনা ছিল। উপজেলা সদরের আশপাশে মসজিদ নির্মাণের স্থান নির্ধারণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এতে মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে হোঁচট খায়। যারফলে পূর্ববর্তীতে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রসারে সরকার দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ৫৬০টি মডেল মসজিদ-সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট