চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ইএফটি জটিলতায় চার উপজেলার সাড়ে তিন হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের বেতন আটকা

ইমরান বিন ছবুর  

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ১২:৫৫ অপরাহ্ণ

ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) জটিলতার কারণে চার উপজেলার ৩ হাজার ৩৫১ জন শিক্ষকের বেতন আটকে রয়েছে। চট্টগ্রামের রাউজান, বোয়ালখালী, হাটহাজারী ও লোহাগাড়া উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ও সহকারী শিক্ষকরা গত জানুয়ারি মাসের বেতন এখনো পাননি। এ নিয়ে শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং একই সাথে শুধুমাত্র বেতনের উপর নির্ভর থাকায় তাদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। যেসব উপজেলায় ইএফটি পদ্ধতি চালু হয়েছে শুধুমাত্র সেসব উপজেলায় বেতন নিয়ে এ জটিলতা শুরু হয়েছে। তবে এ জটিলতা নিরসনে এখনো সুস্পষ্ট কোন নির্দেশনা আসেনি বলে জানান শিক্ষকবৃন্দ।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, রাউজান উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান ও সহকারী শিক্ষক রয়েছেন ১ হাজার ১০৪ জন, বোয়ালখালী উপজেলায় প্রধান ও সহকারী শিক্ষকের সংখ্যা ৬৯১ জন, হাটহাজারীতে প্রধান ও সহকারী শিক্ষকের সংখ্যা ৮৯৪ জন এবং লোহাগাড়া উপজেলায় প্রধান ও সহকারী শিক্ষকের সংখ্যা ৬৬২ জন।

বোয়ালখালী উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে আমি নিজে ট্রেজারি অফিসারের সাথে কথা বলেছি। বেতন না পাওয়ায় আমাদের শিক্ষকরা নানান সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই বেতন যাতে দ্রুত পাওয়া যায় সে ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করি উনাকে। এ ব্যাপারে আমাদের উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারও কথা বলেছেন। মন্ত্রণালয় থেকে কয়েকদিনের মধ্যে এর সমাধান হবে বললেও এখনো কোন সমাধান হয়নি।  তিনি আরো বলেন, ইএফটি পদ্ধতিতে বেতন গ্রহণ করার পর আবার ম্যানুয়ালি বেতন নিতে গেলে সমস্যার সম্মুখিন হতে হবে। প্রত্যেক শিক্ষকের প্রবিডেন্ট ফান্ড রয়েছে। ইএফটিতে প্রবিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা রাখা হয়। একবার ইএফটিতে প্রবিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা হয়ে গেলে তা আর ম্যানুয়ালি নেয়ার সুযোগ নেই।

বোয়ালখালী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, প্রতি মাসের ৪-৫ তারিখের মধ্যে বেতন পেলেও ইএফটি জটিলতায় গত জানুয়ারি মাসের বেতন আমরা তারা পায়নি। মাস শেষে বেতন পেতে দেরি হওয়ার কারণে অনেকেই হতাশা ব্যক্ত করেছেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসের থেকে শিক্ষকদের বেতন প্রাপ্তির ব্যাপারে বার বার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এখনো কোন সমাধান হয়নি। কবে নাগাদ এ সমস্যার হবে সে ব্যাপারেও কেউ স্পস্ট কিছু বলতে পারছে না। এছাড়া, ট্রোজারি অফিস ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বেতন দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে বলে জানান একাধিক শিক্ষক।

জানতে চাইলে রাউজান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল কুদ্দুস বলেন, এক মাস ইএফটিতে বেতন দেয়ার পর এখন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর ইএফটিতে বেতন দিবে না। এখন আবার আগের মত ম্যানুয়ালি বেতন দিবে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হওয়ার শিক্ষকদের চলতি মাসে বেতন পেতে সামান্য দেরি হচ্ছে। তবে গত সপ্তাহে শিক্ষকদের একাউন্টে বেতন পৌঁছে গেছে বলে দাবি এই শিক্ষা অফিসারের।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, চার উপজেলার প্রাথমিকের শিক্ষকরা বেতন না পাওয়া নিয়ে উপজেলার শিক্ষা অফিসার বা কোন শিক্ষক আমাকে জানাইনি। তবে ইএফটি জটিলতার কারণে কেউ যদি বেতন না পায়, তাহলে ম্যানুয়ালি বেতন নিতে পারবে। এটা নিয়ে কোন সমস্যা হওয়ার কথা না।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট