চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ফুটপাত ছাপিয়ে সড়কেও বেপরোয়া হকার

মোহাম্মদ আলী  

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ১২:০৪ অপরাহ্ণ

দোকানের সাইজ অনুযায়ী প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ টাকা চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করেন নগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজার, আমতল, স্টেশন রোড ও নিউমার্কেট এলাকার ভাসমান হকাররা। ফুটপাত ও সংলগ্ন সড়ক দখল করে হকাররা এ ব্যবসা করে আসছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেয়াজউদ্দিন বাজার এলাকার কয়েকজন হকার বলেন, হকার্স লীগ ও পুলিশের নাম দিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট হারে চাঁদা তোলা হয়। চাঁদা না দিলে এখানে ব্যবসা করা যায় না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজার, স্টেশন রোড, নিউমার্কেট ও আমতল এলাকার ফুটপাত ও সংলগ্ন সড়ক অবৈধভাবে দখল করে ব্যবসা করছে ভাসমান হকাররা। এতে যানবাহন চলাচলের ভোগান্তি ছাড়াও দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারীরা। হকার বসার কারণে অর্ধেক সড়কেও যানবাহন চলাচল করা যায় না। তাতে সারাদিন ওইসব এলাকায় যানজট লেগে থাকে।

কয়েকজন পথচারী অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস আগে হকারদের উচ্ছেদ করেছিলেন চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। কিন্তু চসিক নির্বাচনের পর ফুটপাত ও সংলগ্ন সড়ক পুনরায় দখল করে নিয়েছে ভাসমান হকাররা। বিনিময়ে তাদের প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয় একটি রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনকে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘প্রশাসকের দায়িত্ব পালনকালে রেয়াজউদ্দিন বাজার, আমতল, স্টেশন রোড, নিউমার্কেট এলাকাসহ নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও ফুটপাতে অবৈধভাবে বসা হকারদের উচ্ছেদ করে পথচারী ও যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করেছিলাম। তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেকটা স্বস্তি ফিরে আসে।’

নির্বাচনের পর আলোচ্য এলাকায় পুনরায় হকারদের দখলে চলে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নতুন মেয়র দায়িত্ব নিয়েছেন। আশা করি তিনি এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন।’

এদিকে রেয়াজউদ্দিন বাজার, আমতল, স্টেশন রোড ও নিউমার্কেট এলাকার মতো নগরীর গুরুত্বপূর্ণ অনেক মোড় ভাসমান হকারদের দখলে। আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ের চারদিকের ফুটপাত দখল করে আছে ভাসমান হকাররা। এ কারণে ফুটপাত দিয়ে চলাফেরা করতে পারে না পথচারীরা। বিশেষ করে মোড়ে সোনালী ব্যাংক জোনাল অফিসের সামনে ফুটপাত সকাল থেকে রাত অবধি পর্যন্ত হকারদের দখলে থাকে। পথচারীরা ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে না পেরে সড়কে নেমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করে। এসব এলাকার হকাররা জানায়, চাঁদা দিয়ে তারা ফুটপাতে ব্যবসা করে। কারা চাঁদা নেয় তা কারো অজানা নয়।’

নগরীর ব্যবসার গুরুত্বপূর্ণ এলাকা জিইসি মোড়। মোড়ে রয়েছে সেন্ট্রাল প্লাজা। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এ শপিং মলে কেনাকাটা করতে আসে। কিন্তু মোড়ে ফুটপাত ও সংলগ্ন সড়ক দখল করে ভাসমান হকাররা ব্যবসা করার কারণে ভোগান্তির শিকার হন পথচারীরা। এ অবস্থা ষোলশহর দুই নম্বর গেট বিপ্লব উদ্যানের সামনে, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট মোড়, চকবাজার, আন্দরকিল্লা প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এসব এলাকার ফুটপাত হকারদের দখলে থাকার কারণে দুর্ভোগে পড়েন হকাররা।

বহদ্দারহাট মোড় ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাত জুড়ে বসে আছে হকাররা। পথচারীদের হাঁটার কোন জো নেই। এমনকি ফুটপাত ছাপিয়ে হকাররা সড়কের বিশাল অংশ দখল করে বসে থাকে। এতে যানবাহন চলাচলে সীমাহীন কষ্টে পড়েন পথচারীরা।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট