চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিমানবন্দরের দেয়ালে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক 

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ১:১৩ অপরাহ্ণ

১৯৬৬ সাল। পাকিস্তানের শোষণে তখন দিশেহারা বাঙালি জাতি। সেই শোষণ থেকে মুক্তি পেতে ৬ দফা দাবি পেশ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দাবির মূল উদ্দেশ্য পাকিস্তানের প্রতিটি প্রদেশকে স্বায়ত্তশাসনের আওতায় আনা। প্রত্যাখান করা হয় বঙ্গবন্ধুর এই দাবি। তবে অধিকার আদায়ে হাল ছাড়েনি বাঙালি জাতি। পাকিস্তানের অন্যায় অত্যাচারের মাঝেও চালিয়ে গেছে স্বাধীনতার আন্দোলন।  সর্বশেষ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বিশাল জনসমুদ্রের মাঝে পরাধীন বাংলাকে স্বাধীন করতে ভাষণ রাখেন শেখ মুজিব। সেখানে তার অগ্নিঝরা কণ্ঠে বলা ‘রক্ত যখন দিয়েছি, প্রয়োজনে আরও দেবো। তবুও এ দেশকে মুক্ত করে ছাড়বো, ইনশাল্লাহ’ এই কথাগুলোতে চিন্তিত হয়ে পড়ে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী। সিদ্ধান্ত নেয় গণহত্যার।

২৫ শে মার্চের সেই কালো রাতে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনারা। চুপ করে বসে থাকেনি বাঙালিরা। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ছক করে পরিকল্পনা করা হয় পাকিস্তানিদের পাশাপাশি রাজকারদের হত্যা করার। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধে সাত জন বীরশ্রেষ্ঠ ও ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভ করে বাঙালি জাতি। পায় একটি লাল সবুজের স্বাধীন পতাকা ও একটি স্বাধীন দেশ। নতুন প্রজন্মের পাশাপাশি চট্টগ্রামে আসা বিদেশি পর্যটকদের কাছে দেশ স্বাধীনের এই ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশমুখে ‘বিজয় ৭১’ নামে ৫টি ম্যুরালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের এই ইতিহাসটুকু। আগামী ৭ মার্চ ম্যুরালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।  বিমানবন্দরের দেয়ালে মুক্তিযুদ্ধের এ ইতিহাস তুলে ধরেছে শিল্পী শ্রীকান্ত আশ্চার্য্য। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘ম্যুরালটিতে বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধের পাঁচটি বিশেষ সময়কে প্রতিভাত করা হয়েছে। ম্যুরালটির নাম ‘বিজয় ৭১’। বিভিন্ন রঙের টাইলস কেটে ৫টি ম্যুরালের প্রথমটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে  ৬ দফা, দি¦তীয়টিতে ৭ই মার্চ, তৃতীয়টিতে ২৫ মার্চ কালরাত্রির ভয়াবহতার ছবি, চতুর্থটিতে-‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে’ পোস্টারে মুক্তিযুদ্ধের প্রতীকী রূপায়ণ, পঞ্চম ও শেষটিতে বিজয়ের জাতীয় পতাকা, স্মৃতিসৌধ ও সাত বীরশ্রেষ্ঠের ছবি।’

শিল্পী হিসেবে অনুভূতি জানতে চাইলে শ্রীকান্ত আশ্চার্য্য বলেন, ‘বিজয় ৭১’, মাত্র! পাঁচটা প্যানেলে মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো ঘটনাবহুল বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে জেনে আমার অকূলপ্রান্তরে পড়ার মতো অবস্থা। অবশেষে প্রায় দুই মাসের কষ্টের পর এই ম্যুরালগুলোর কাজ শেষ হয়েছে। এই কাজে আমাকে সহযোগিতা করেছে সহশিল্পী মোশারফ উদ্দিন মিশু ও শুভ। আশা করি আগামীতে আরো বড় ও বিস্তৃত পরিসরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করতে পারবো।’

 

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট