চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ভাষার মাস এলেই তোড়জোড়

নিজস্ব প্রতিবেদক 

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ১২:৩৭ অপরাহ্ণ

সারাবছর খবর নেই ভাষার মাস আসলেই শুরু হয় তোড়জোড়। ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে বাংলা বানান বিকৃতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলে। কোথাও কোথাও ভুল বানান আর ইংরেজি লেখার ওপর কালির প্রলেপও দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানেই সব শেষ। বানান বিকৃতি রয়ে যায় আগের মতোই।

বানান বিকৃতির সিংহভাগ চিত্র দেখা যায় বিলবোর্ডগুলোতে। বিভিন্ন ফলকেও একইভাবে ভুল বানানের লেখা চোখে পড়ে। দোকানের সামনে সাঁটানো বিলবোর্ডে তো অহরহ বানান ভুল হচ্ছেই। যানবাহনে লেখা নানা স্লোগানেও একই দশা। সরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকসহ নামিদামি বড় কিছু প্রতিষ্ঠান তো তাদের নামের বানান ভুল সংশোধনের কোনো উদ্যোগ না নিয়ে ভুল লিখেই যাচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে বিশিষ্টজনেরা পরামর্শ দিয়েছেন ‘লোক দেখানো’ কর্মসূচি বাদ দিয়ে সারাবছরই যেন মানুষকে সচেতন করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়। মানুষের মানসিকতা পরিবর্তনও বড় জরুরি। বাংলাভাষার প্রতি মানুষের ভালোলাগা-ভালোবাসা জাগ্রত করতে হবে।

এসব ভুল ও বিকৃতি রোধে মানুষের মানসিকতা পরিবর্তনই বড় জরুরি বলে মনে করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘আমরা বানান বিকৃতি ও অন্য ভাষার শাসন রোধে নানা উদ্যোগ দেখি। কিন্তু এতেও মানুষের মধ্যে সে বিষয়ে মানসিকতা তৈরি হচ্ছে না। মানুষকেই তাই এগিয়ে আসতে হবে। বিষয়টি উপলব্ধি করতে হবে’।

ইংরেজি জানাটা দরকার মন্তব্য করে আহমেদ ইকবাল হায়দার বলেন, ‘কিন্তু নিজের ভাষাটা আগে। এটিই প্রধান হওয়া অবশ্যই উচিত। মানুষকে এই বিষয়টি অনুভব করতে হবে’।

বাংলাভাষার প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত করানো ছাড়া বিকৃতি রোধ সম্ভব নয় বলে মনে করেন শিশুসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কাপ্রাপ্ত বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক রাশেদ রউফ। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত না হলে বানান ও ব্যবহার নিয়ে অসচেতনতা ও ঘাটতি দূর হবে না’। বাংলা বানান নিয়ে অনেক সময় স্বেচ্ছাচারিতা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এই শিশুসাহিত্যক। তিনি বলেন, ‘এ জন্য আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি বানান সংস্কারের বিষয়ে যে উদ্যোগ গ্রহণ করে সে বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে বানান বিকৃতি রোধ সম্ভব’।

তবে আশাবাদী রাশেদ রউফ। তিনি বলেন, ‘শব্দ হলো গাছের পাতার মতো। নতুন পাতা গজাবে, আবার পুরোনো পাতা ঝরে পড়বে। তেমনি নতুন নতুন শব্দ আসবে। আর যেগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে সেই শব্দগুলো ব্যবহার না করতে করতে একটা সময় ঝরে পড়বে। তাই আমি আশা করছি মানুষের মধ্যে সচেতনা বাড়তে বাড়তে একদিন বানান বিকৃতিও দূর হয়ে যাবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট