চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে চুয়েট সহকারী অধ্যাপকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

রাউজান সংবাদদাতা

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ১১:৪১ অপরাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডির গবেষণায় অবস্থানরত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট)’র তরুন সহকারী অধ্যাপক অভিজিৎ হীরার (২৭)  রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে স্থানীয় সময় সকালে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগার থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেন সহকর্মীরা। তার মরদেহটি সেখানকার পুলিশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছেন।  হীরা যুক্তরাষ্ট্রের মারকেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। তার এই মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি অন্যকিছু তা তদন্তশেষে প্রতিবেদনে নিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছেন চুয়েট কর্তৃপক্ষ।

চুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, নিহত অভিজিৎ হীরা চুয়েটের ইলেকট্রনিক ও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। আজ শুক্রবার তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. আজাদ হোসাইন। অভিজিৎ পিএইচডি করতে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান বলে সহকর্মীরা জানান।

 

চুয়েটে অভিজিৎ হীরার সহকর্মী ও সহকারী অধ্যাপক নুরসাদুল মামুন পিএইচডি করার জন্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে আছেন। তিনি জানান, অভিজিৎ আবহাওয়ার কারণে ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারেই অবস্থান করতে বাধ্য হয় বলে জেনেছেন। এখন তার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশের কাছে রয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

 

মারকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ওয়েব পোর্টালে অভিজিতের মৃত্যুসংবাদকে ‘অপ্রত্যাশিত’ বলা হয়েছে। গবেষণাগারে মরদেহের পাশে নিহতের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও পাসওয়ার্ড, দুটি মুঠোফোন ও ল্যাপটপ এবং এগুলো পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আবেদনের চিরকুট পাওয়া যায়। অভিজিৎ হীরার মৃত্যুতে চুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

 

জানা যায়, ছোটবেলা থেকে মেধাবী অভিজিৎ হীরা গোপালগঞ্জ জেলার সাহাপুর ইউনিয়নের টুঠামান্দ্রা গ্রামের মৃণাল কান্তি হীরা ও স্মৃতি কণা হীরার তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট। ২০০৯ সালে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক সম্পন্ন করার পর ২০১৮ সালে চুয়েটে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।

 

যুক্তরাষ্ট্রের মারকেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার বিষয় ছিল ইলেকট্রিক্যাল ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট’ হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। ইতিমধ্যে ১২টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে অভিজিতের। বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মাইকেল লভেল তাকে ‘গিফটেড স্কলার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

এদিকে তরুণ এই শিক্ষকের মৃত্যু মানতে পারছেন না চুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রফিকুল আলম ও চুয়েট শিক্ষক সমিতি পৃথক শোক বার্তা দিয়েছেন। তার মৃত্যুতে সোমবার সকাল ১১টায় চুয়েটে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

 

পূর্বকোণ/মামুন

 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট