চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সরকারি কলেজের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করলে সমস্যা কিছুটা কমবে বলে ধারণা শিক্ষাবিদদের

উচ্চশিক্ষা : ভর্তি নিয়ে ‘দুশ্চিন্তা’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা ব্যয়বহুল হওয়ায় সবাই পড়ার সুযোগ পাবে না

ইমরান বিন ছবুর 

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ৩:৫৭ অপরাহ্ণ

চলতি বছরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা নিয়ে সংকটে পড়ার আশংকা রয়েছে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে (অটো পাস) উত্তীর্ণ হয়েছেন। শিক্ষার্থীর তুলনায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার আসন সীমিত। তাই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। তবে এ নিয়ে চট্টগ্রামের শিক্ষাবিদদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২০২১ সালের এইচএসসির প্রকাশিত ফলে উত্তীর্ণ হয়েছে ৯৭ হাজার ৯৬৭ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে চট্টগ্রাম জেলা ও শহরে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৭২ হাজার ৪৯৪ জন শিক্ষার্থী। যেখানে ২০১৯ সালে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬১ হাজার ৫২৩ জন, ২০১৮ সালে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬০ হাজার ৭৫৫ জন এবং ২০১৭ সালে ৫০ হাজার ৩৪৭ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান এসব শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক।

তথ্য মতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা ৪ হাজার ৯২৬টি, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ৮৯০টি, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ২৬০টি, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) ২৪৫টি আসন সংখ্যা রয়েছে।

 

অন্যদিকে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য মতে, চট্টগ্রাম জেলায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি-বেসরকারি কলেজে অনার্স সম্মান কোর্সে ১৮ হাজার ৭৯৫টি আসন রয়েছে। এর বাইরে ডিগ্রী পার্স কোর্সেও কিছু আসন সংখ্যা রয়েছে। এর বাইরে চট্টগ্রামে ১১টির মত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনটিতে ৬ মাস অন্তর অন্তর এবং কোনটিতে ৪ মাস অন্তর অন্তর ভর্তি করানো হয়।

উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি নিয়ে একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষার্থীর তুলনায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আসন সংখ্যা কম থাকায় উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি নিয়ে চিন্তিত তারা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও পড়াশুনা ব্যয় সাপেক্ষ হওয়ায় অনেকেই উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে জানান তারা।

ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দার খান জানান, এটা সত্যি যে, এবার আসন সংকটের কারণে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ থেকে অনেক শিক্ষার্থী বঞ্চিত হতে পারে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে যেহেতু আসন সংখ্যা কম তাই বাধ্য হয়েই অসংখ্য শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। সবার তো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সামর্থ্য নেই। অন্যদিকে, সরকার চাইলে সরকারি কলেজগুলোর আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করে শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ দিতে পারে। তাই সরকারের এসব বিষয় নিয়ে এখনই ভাবা উচিত।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্ত্তী বলেন, উচ্চ শিক্ষায় ভর্তিতে আসন সংখ্যা নিয়ে সমস্যা হবে না। আগে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হতো। এবার ১০০ ভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি হওয়ার পরও অনেক কলেজে আরও আসন খালি থেকে যেতো। তাই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ থেকে শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত হওয়ার আশংকা নেই।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রফেসর হাসিনা জাকারিয়া, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে পাশকৃত শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র যে চট্টগ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবে তা কিন্তু না। তারা ঢাকাসহ দেশের বাইরে উচ্চ শিক্ষার জন্য যায়। আবার এইচএসসি উত্তীর্ণ হওয়া সব শিক্ষার্থীরা যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে, তা না। যেহেতু সেখানে প্রতিযোগিতা হয়, যারা যোগ্য শুধুমাত্র তারাই ভর্তির সুযোগ পায়। উচ্চ শিক্ষার জন্য কারিগরি শিক্ষা নিয়ে সরকারি ভাবতে পারে।

 

পূবকোণ/পি-মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট