চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

গৃহকর আদায়ে কঠোর অবস্থানে মেয়র

ইফতেখারুল ইসলাম

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ২:১৩ অপরাহ্ণ

বড় খেলাপিদের নোটিশ প্রদানের নির্দেশ দিয়ে ‘গৃহকর খেলাপি’দের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে দিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। দায়িত্ব নেয়ার তৃতীয় দিন গতকাল বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত একান্ত বৈঠকে তিনি বলেন, তিনি কখনো কোন অপশক্তির কাছে মাথানত করেননি। প্রয়োজনে কর খেলাপিদের বিরুদ্ধে সার্টিফাইড মামলা এবং ক্রোকি পরোয়ানা জারির মাধ্যমে কর আদায়ের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। অতীতে সিটি কর্পোরেশন যদি বনানী কমপ্লেক্সের মালিক গোলাম কবিরের প্রতিষ্ঠান ক্রোক করে কর আদায় করতে পারে তাহলে এখন পারবে না কেন? এমন প্রশ্ন তুলে বলেন, বাধা কোথায়? একইসাথে করদাতাদের ভাল ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে কর্মকতাদের উদ্দেশে বলেন, তিনি নিজেও অসৎ কাজ করেন না। অসৎ কাজের প্রশ্রয়ও দেন না। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ যদি এই ধরনের চিন্তা-ভাবনা করে থাকেন তাহলে তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলার পরামর্শ দেন এবং সৎভাবে চাকরি করার আহ্বান জানান।

সভায় নানা বিষয় নিয়ে আলোচনার কথা স্বীকার করে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, লেক সিটি’র ১০১ টি প্লটের টাকা ক্রেতার কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে। কিন্তু তাদের দেয়ার মত জমি নেই। আলহাজ এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর আমলে এসব প্লট বিক্রি করেছিল চসিক। নতুন করে জমি কেনা ছাড়া তাদের প্লট দেয়া সম্ভব নয়। একেকজন ক্রেতার কাছ থেকে সাত লাখ হতে ১১ লাখ টাকা গ্রহণ করেছে চসিক। এছাড়া রাজস্ব বিভাগের আরো কিছু সমস্যা এবং সমাধানের বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। মেয়রের নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করদাতাদের সাথে ভাল ব্যবহার করে কর আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে বড় খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথাও জানিয়ে দিয়েছেন মেয়র।

সার্কেল ৫ এর কর কর্মকর্তা এ কে এম সালাউদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন রাজস্ব বিভাগে দ্বন্দ্ব ছিল। কেউ কারো সাথে কথা পর্যন্ত বলত না।  মেয়র আসার আগে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। শপথ নিয়েছি  মেয়রের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। আমি যখন ওয়ারেন্ট অফিসার ছিলাম তখন বনানী কমপ্লেক্সে ১৪ লাখ টাকা বকেয়া ছিল। ইকবাল মাহমুদ ছিলেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা। একটি ক্রোকের ঘটনায় অনেক বড় বড় গৃহকর খেলাপিরা লাইন ধরে তাদের বকেয়া পরিশোধ করেছিলেন। কভিডের মধ্যেও অন্যান্য সময়ের তুলনায় কর আদায় বেড়েছে। বড় লোকদের মাঝে গৃহকর দেয়ার প্রবণতা কম। কর আদায়ের উপর যে স্থগিতাদেশ আছে তা প্রত্যাহার করা গেলে কর আদায় কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। সরকারি হোল্ডিংয়ের স্থগিতাদেশ যেভাবে বাতিল করা হয়েছে, বেসরকারি হোল্ডিংয়ের স্থগিতাদেশও সেভাবে বাতিল করা যায়। কর খেলাপিদের মধ্যে অনেক খারাপ লোক আছে যারা রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। মিথ্যা অভিযোগ দেন। কাজের সময় এসব বিষয় বিবেচনা করার জন্য মেয়রের প্রতি অনুরোধ জানান।

সার্কেল ৩ এর কর কর্মকর্তা (লাইসেন্স) জানে আলম অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থায়ী করার অনুরোধ জানান।

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, রাজস্ব বিভাগের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদনাম আছে। আয়ের তুলনায় কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর জীবনযাপনের মান অনেক বেশি। সৎ এবং পরিচ্ছন্ন জীবন-যাপন করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, অনেক করদাতা জানেন না কিছু এলাকায় কর দিতে হয় ১৪ শতাংশ, কোথাও ১৭ শতাংশ। এটা করদাতাদের বোঝাতে হবে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট