চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

১১ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা

বন্দরে কাগজ ঘোষণায় এলো কন্টেইনার ভর্তি সিগারেট

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ৪:২১ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে কাগজ আমদানির ঘোষণা দিয়ে তার আড়ালে আনা হয়েছে ২৩ হাজার কার্টন (৪৬ লাখ শলাকা) ইজি এবং মন্ড ব্রান্ডের বিদেশি সিগারেট। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি করায় কন্টেইনার ভর্তি পণ্য জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
গত রবিবার আমদানি পণ্যের কায়িক পরীক্ষা চালিয়ে কাগজের পরিবর্তে এসব বিদেশি সিগারেট পাওয়া যায়। এতে ১১ কোটি টাকার সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করা হয়ে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
কাস্টমস সূত্রে জানায়, নগরীর রিয়াজুদ্দিন বাজারের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান করিম ট্রেডিং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এফোর সাইজের কাগজ ঘোষণা দিয়ে এক কনটেইনার পণ্য আমদানি করে। এসব পণ্য খালাসের জন্য গত ৪ ফেব্রুয়ারি সিএন্ডএফ এজেন্ট সুরমা এন্টারপ্রাইজ কাস্টম হাউসে বিল অব এন্ট্রি (নম্বর সি-২২১১৮৬) দাখিল করে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন এন্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার কর্মকর্তাদের সন্দেহ হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শুল্কায়ন বিষয়ক সফটওয়্যার এসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রিটি লক করে রাখে।
এরপর রবিবার নিয়ম অনুযায়ী পণ্যের কায়িক পরীক্ষা করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর টিম।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার (এআইআর) রেজাউল করিম জানান, কনটেইনার খুলে দেখা যায় সামনের দিকে রাখা সুসজ্জিত কাগজ দেখিয়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে প্রতারণারকারীরা। কনটেইনারের ভেতরের পণ্য বের করার জন্য সিএন্ডএফ প্রতিনিধিকে অনুরোধ করলে তারা গড়িমসি শুরু করে। একপর্যায়ে কায়িক পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য পাল্টা অনুরোধ করে। পরে কাস্টম কমিশনারের নির্দেশে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা, বন্দর ও সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে রাতেই পণ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয় এআইআর শাখা।
কনটেইনার থেকে সব পণ্য বের করে আনার পর দেখা যায়, ৪৮টি পলিথিনে মোড়ানো প্যালেটের প্রতিটিতে ৪৮টি কার্টন রয়েছে। যার উপরের স্তরের ১২টি কার্টনে শুধুই কাগজ এবং পরবর্তী ৩৬ কার্টন খুলে উপরে একরিম এফোর সাইজের কাগজ পাওয়া যায়। কাগজের নিচে আলাদা অন্য একটি কার্টনে পাওয়া যায় অভিনব কায়দায় লুকানো সিগারেট।
কনটেইনারের প্রথম আটটি প্যালেটে ছিল শুধুই কাগজ এবং নবম প্যালেট থেকে পরবর্তী ৪৮টি প্যালেটে পাওয়া যায় লুকানো বিদেশী সিগারেট। রবিবার রাত আনুমানিক ২টায় শেষ হওয়া পরীক্ষায় ৪৬ লাখ শলাকা সিগারেট পাওয়া যায়। রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম। এ সময় তিনি দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট