চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

করোনা টিকায় আগ্রহ বাড়ছে

ইমাম হোসাইন রাজু 

৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ২:০১ অপরাহ্ণ

উৎসবের আমেজে করোনার টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনেও চট্টগ্রামের কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভিড় বেড়েছে টিকা গ্রহীতাদের। শুরুর দিকে যারা টিকার ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখিয়েছিলেন, তারাও টিকা নেয়ার বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কেন্দ্রে এসে খোঁজ খবর নিচ্ছেন তারা।

প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, প্রথম দিনের তুলনায় টিকাদানের কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়েছে আড়াইগুণ। সকাল থেকেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ছিল যেন উৎসবের আমেজ। সামনের দিনে এ সংখ্যা আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে।

অন্যদিকে উদ্বোধনের দিন নগরীসহ চট্টগ্রামে ২০ কেন্দ্রে টিকাদানের কর্মযজ্ঞ শুরু হলেও কেন্দ্র বেড়েছে আরও তিনটি। গতকাল সোমবার একযোগে ২৩ কেন্দ্রে চলে টিকাদান কার্যক্রম। টিকাদানের দ্বিতীয় দিনে এ ২৩ কেন্দ্রে ২ হাজার ৬৭৮ জনকে টিকা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি প্রথমদিন টিকা নেয়া ১ হাজার ৯০ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত টিকা নেওয়া কারো মধ্যেই কোন বিরূপ পাশর্^ প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর সবচেয়ে বড় টিকাদানের কেন্দ্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল দ্বিতীয় দিনেও ছিল উৎসবমুখর।  সকাল থেকেই টিকা পেতে ভিড় করেন সম্মুখসারির যোদ্ধারা। এরমধ্যে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে টিকা নিতে আসেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও প্রবীণ চিকিৎসক ডা. ইমরান বিন ইউনুস প্রমুখ।

পাওয়া যায়নি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: চট্টগ্রামে প্রথম দিন ১ হাজার ৯০ জনকে টিকা দেয়ার দু’দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো ধরণের বিরূপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি। যদিও টিকা নেয়ার পর ৪/৫ জনের শরীরে স্বাভাবিক জ¦র এসেছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে তাও সাধারণ  জ্বর  বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, সুরক্ষার জন্য টিকার বিকল্প নেই। টিকা নেয়ার ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ অনেক বেড়েছে। গ্রাম অঞ্চলের মানুষও এখন টিকা নিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় করছেন। মিডিয়ার প্রচারের ফলে এমন আগ্রহ বাড়ার কারণ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আরও তিন কেন্দ্রে শুরু টিকাদান: আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম দিন নগরীতে সশস্ত্রবাহিনীর চার কেন্দ্রসহ ৬ কেন্দ্রে টিকাদান শুরু হয়। যদিও দ্বিতীয় দিনে আরও তিনটি কেন্দ্র শুরু হয়েছে টিকাদান কর্যক্রম। যাতে সম্মুখসারির যোদ্ধাদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। তিন কেন্দ্র হলো- চসিক জেনারেল হাসপাতাল, মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল, বন্দরটিলা মাতৃসদন হাসপাতাল।

নগরীর ৯ কেন্দ্রে টিকা নিল ১৪৬৮ জন: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতায় ১৫ কেন্দ্রের মধ্যে গত টিকাদান কর্মযজ্ঞ চলে ৯ কেন্দ্রে। যাতে সর্বমোট ১ হাজার ৪৬৮ জনকে টিকা প্রদান করা হয়। এরমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ৪২৬ জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১৭৬ জন, বিমানবাহিনী হাসপাতালে ৬০ জন, নৌবাহিনী হাসপাতালে ৫১০ জন, সিএমএইচ হাসপাতালে ৬৭ জন, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ১৪০ জন, চসিক জেনারেল হাসপাতালে ৫৯ জন, চসিকের মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালে ১০ জন, বন্দরটিলা মাতৃসদন হাসপাতালে ২০ জনকে টিকা দেয়া হয়।

১৪ উপজেলায় টিকা নিলেন ১২১০ জন: চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলা টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে ১ হাজার ২১০ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি টিকা দেয়া হয়েছে রাউজানে। সেখানে ২১০ জনকে টিকা দেয়া হয় এ দিন। অন্য উপজেলার মধ্যে লোহাগাড়ায় ৫০ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৮০ জন, ফটিকছড়িতে ৪০ জন, বাঁশখালীতে ১৬০ জন, আনোয়ারায় ৭৯ জন, সীতাকু-ে ৭৭ জন, সাতকানিয়ায় ৮৮ জন, মিরসরাইয়ে ১০৪ জন, চন্দনাইশে ২০ জন, বোয়ালখালীতে ৯২ জন, হাটহাজারীতে ৮০ জন, সন্দ্বীপে ১০ জন এবং পটিয়ায় ১২০ জনকে টিকা দেয়া হয়।

নিবন্ধন ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে: গত রবিবার পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনার ভাইরাসের সুরক্ষার টিকা পেতে ২৯ হাজার ৬৬০ জন অনলাইনের মাধ্যমে নিবন্ধন করলেও এখন তা ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২ হাজার ৮০৬ জন টিকা নিতে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করেছেন। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৩২ হাজার ৪৬৬ জন টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন। এরমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২৩ হাজার ৬৩৫ জন এবং ১৪ উপজেলায় ৮ হাজার ৮৩১ জন সুরক্ষা অ্যাপের মধ্যে নিবন্ধন করেছেন করোনার টিকা পেতে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট