চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের শিকার চট্টগ্রাম বিভাগের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ জুন, ২০১৯ | ২:১১ পূর্বাহ্ণ

নিরাপদ পানি, খাদ্য ও পরিবেশগত বৈরি প্রভাবে নানামুখী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে চট্টগ্রাম বিভাগের নারী ও শিশুরা। জলাবদ্ধতা, লবণাক্ততাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এ বিভাগের মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের শিকার হচ্ছেন। যার কারণে ম্যালেরিয়া ও ডায়েরিয়ার মতো অসুখগুলো প্রকট আকার ধারণ করছে। এর সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো নতুন নতুন অসুখেরও সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এসব আপদ দূর করতে জনসাধারণকে সচেতন ও স্বাস্থ্য সেবায় নতুন নতুন পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। গতকাল বুধবার নগরীর হোটেল আগ্রাবাদে ‘জলবায়ু সহিষ্ণু স্বাস্থ্য অভিযোজন পরিকল্পনা’ শীর্ষক বিভাগীয় কর্মশালায় এসব কথা জানান বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড হেলথ প্রোমোশন ইউনিটের আয়োজনে ও ইউনিসেফের সহায়তায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব পারভীন আক্তারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান খান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নুরুল আলম নিজামী, সেভ দ্যা চিলড্রেনের ডেপুটি কান্ট্রি ডাইরেক্টর ডা. ইশতিয়াক মান্নান, বিসিসিটি’র পরিচালক মো. শাহজাহান প্রমুখ। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড হেলথ প্রোমোশন ইউনিটের সমন্বয়কারী প্রফেসর ডা. ইকবাল কবির। কর্মশালায় বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তজনিত কারণে এ অঞ্চলের বয়স্কদের তুলনায় শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় তাদের ডায়েরিয়া ও অন্যান্য প্রাণঘাতি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। দুর্যোগে স্কুল, সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকি ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় নারীরা শিশু ও গৃহস্থালি জিনিসপত্র রক্ষার চেষ্টা করায় অনেক নারী ও শিশু মারা যান। চট্টগ্রাম বিভাগের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা ততটা উন্নত না হওয়ায় সুবিধাবঞ্চিত নারী ও শিশুরা উচ্চ মাত্রায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এতে মা ও শিশুর অপুষ্টির পাশাপাশি মৃত্যুহারও বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় মা ও শিশুদের জন্য যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্য ঝুঁকি হ্রাসে সরকারি- বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের পাশাপাশি প্লাস্টিক দূষন প্রতিরোধে তৃণমূল পর্যায় থেকে সকলকে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা।
বক্তারা আরও বলেন, শুধু চট্টগ্রাম নয়, চট্টগ্রাম বিভাগসহ সারা দেশে স্বাস্থ্যগত যে সমস্যা হচ্ছে এসব বিষয় চিহ্নিত করে জাতীয়ভাবে সমাধানের কাজ করতে হবে। কিভাবে মানুষকে সুস্থ রাখা যাবে, কিভাবে দুর্গম এলাকায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেওয়া যায় এসব বিষয়ে সকলকে ভবিষতে কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। ঘুর্ণিঝড় সমস্যটা এ অঞ্চলে বেশি। পাশাপাশি ভূমি ধসের কারণে এ অঞ্চলে প্রতিবছর প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়। এসব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
মুল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড হেলথ প্রোমোশন ইউনিটের সমন্বয়কারী মো. ইকবার কবীর বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলায় স্বাস্থ্যখাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই। নানামুখী স্বাস্থ্য ঝুঁকি হ্রাসে আরও সরকারি-বেসকারি বিনিয়োগ বাড়াতে তিনি আহ্বান জানান।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট