চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

স্বাধীনতা পার্কে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করছেন মেয়েরা

৪ নং চান্দগাঁও ওয়ার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ জুন, ২০১৯ | ১:৫৪ পূর্বাহ্ণ

পড়ন্ত বিকেল। শান্ত পরিবেশ। কফি, লাচ্ছি, ফুচকা, চটপটি আর নানা রকম খাবার খেতে খেতে আড্ডায় মেতে আছে বন্ধু-বান্ধবী ও শিশুদের নিয়ে বাবা-মা। সারি সারি সাজানো চেয়ারে বসে গল্পে মেতে আছে সকলে। চার পাশে সবুজ গাছপালা আর এমন খোলা মেলা পরিবেশে আড্ডা দিতে দিতে খাবার খাওয়ার মজাই আলাদা। এমন সুন্দর মনোরম একটি পরিবেশে ‘ঢাক্কাইয়া খানা গুডফুড রেস্টুরেন্টের’। রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করছেন এক নারী ফারজানা আক্তার। রেস্টুরেন্টর কর্মীরাও মহিলা।
একটা সময় ছিল নারীদের শুধু সন্তান পালন আর ঘর সংসার করবে এমনটাই ভাবা হতো। কিন্তু বর্তমানে এটা ভাবার আর সুযোগ নেই। এখন পুরুষের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে সমান তালে দায়িত্ব পালন করছে নারীরা। বর্তমানে নারীদের সব কাজে দেখা যায়। ছোট থেকে বড় সব কাজেই দায়িত্ব পালন করছে নারীরা। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, পাইলট, বিভিন্ন রকম আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ট্রাফিক পুলিশেও কর্মরত আছেন নারীরা। তেমনি কিছু নারী মিলে নগরীর স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে পরিচালনা করছেন একটি রেস্টুরেন্ট। পরিচালনা থেকে শুরু করে রান্না, খাবার পরিবেশন করা সব কাজই করে নারীরা। সম্পুর্ণ রেস্টুরেন্টটি নারী কর্মকর্তা দ্বারা পরিচালনা করছে উদ্যোক্তা ফারজানা আক্তার। নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের ভিতরে আরাকান সড়কের পাশে অবস্থিত ‘ঢাক্কাইয়া খানা গুডফুড রেস্টুরেন্টটি’। এখানে দেশীয় হাতের তৈরি বিভিন্ন খাবারের পাশাপাশি বিদেশি খাবারও পাওয়া যায়। রেস্টুরেন্টে দায়িত্বে থাকা ফারজানা আক্তার বলেন, আমাদের এ রেস্টুরেন্টটি মেয়ে কর্মী দিয়ে পরিচালিত। এখানে খাবার বানানো থেকে শুরু করে খাবার পরিবেশন করা সবই মেয়েরা করে থাকে। বর্তমানে এখানে ছয়টি মেয়ে আছে। দুইজন পড়ালেখা শেষ করে সংসারের পাশাপাশি এখানে কর্তরত আছে ও অপর চারজন পড়া-শোনার পাশাপাশি এখানে চাকরি করছেন। তিনি বলেন, দুই বছর আগে আমি রেস্টুরেন্টের দায়িত্ব পাই। প্রথম প্রথম কাজটি আমার জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সবার সহযোগিতায় আমি নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি। রেস্টুরেন্টটি স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের নিজস্ব ও বর্তমানে আমি এটির ম্যানেজারের দায়িত্বে আছি। রেস্টুরেন্টের সম্পুর্ণ নিরাপত্তার বিষয়টি দেখাশোনা করে স্বাধীনতা কমপ্লেক্স অথরিটি। এখানে জন্মদিন, আকিকা, বিয়ের পাত্র-পাত্রী দেখা, এনগেজমেন্ট, ক্লাসপার্টি, পিকনিকসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান হয়ে থাক। এসব অনুষ্ঠান খুব স্বল্পমূল্যে আমরা করি। কথা হয় এখানে খেতে আসা ফজলুল আজিজ চৌধুরীর সাথে। পেশায় একজন অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি বলেন এখানে আমি প্রায় আসি।
খোলামেলা পরিবেশে বিকেলে কফি খেতে আসি। আর সবচেয়ে ভালো হচ্ছে আমাদের মেয়েরা কাজ করছে। কোন কাজই ছোট নয়। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের মেয়েদের কর্মসংস্থান আরো বাড়াতে হবে। আর মেয়েরা হলো মায়ের জাত তাই তাদের সম্মান করতে হবে। আমরা সুযোগ না দিলে তারা নিজেদের কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কৌহিনুর, তামিম ও নাহিদা বলেন, আমরা তিন বন্ধু মিলে এখানে প্রায় খেতে আসি। এখানে পরিবেশটা সুন্দর আর খাবারগুলোও মানে ভালো। মনে হয় ঘরে তৈরি করা। তার উপর অন্যান্য রেস্টুরেন্টের চেয়ে দামও তুলনামুলক কম। আমরা তো এখনো স্টুডেন্ট এতো টাকা তো আর আমাদের নেই তাই এখানে খুব কম খরচে খাওয়া হয় আর পাশাপাশি গ্রুপ স্টাডি করি আমরা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট