চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চসিক নির্বাচনে আ. লীগ: যতো গ্রুপিং বড়দের সহিংসতায় ছোটরা

ইফতেখারুল ইসলাম 

৩০ জানুয়ারি, ২০২১ | ২:৫৮ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগে বড়দের গ্রুপিংয়ের কারণেই ছোটরা হানাহানিতে জড়িয়েছে। মূলত ঐক্যের অভাবেই কাউন্সিলর পদে ৩৫ ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল। নির্বাচনে কাউন্সিলরদের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে বিতণ্ডা হয়নি এমন ওয়ার্ডের সংখ্যা নিতান্তই কম। কোন কোন ওয়ার্ডে ভোটের দিন লাগাতার গন্ডগোল ছিল।

তবে চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সহিংসতা যা ঘটেছে তা মূলত কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতাদের কোন প্রশ্রয় ছিল না। করোনার প্রকোপ কমে এলে সম্মেলন করে ফেলব। ছোট-খাটো সমস্যাগুলিও নিরসন হবে।

তৃণমূলের একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার সাথে আলাপকালে তাঁরা জানান, একাধিক ভাগে বিভক্ত নগর আওয়ামী লীগ। এরমধ্যে প্রধান দুই ভাগ হল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এছাড়া সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীন, এম এ লতিফ এমপি, সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামসহ অনেক নেতার অনুসারীদের মধ্যে কেউ কেউ দলীয় সমর্থন পেয়েছে। যেখানে সমর্থন পায়নি সেখানে স্বতন্ত্র তথা বিদ্রোহী হিসেবে তাদের অনুসারীরা নির্বাচন করেছে। মেয়র তথা নৌকা প্রতীকে সবাই এক থাকলেও কাউন্সিলর পদে কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি ছিল না। যার ফসল হিসেবে নির্বাচনে সবাই সহিংসতা দেখেছে। এমনিক গুলিতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। ভোটের দিন সহিংসতার ঘটনায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতি ১০ মিনিটে একজন আহত ব্যক্তি ভর্তি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা আলাপকালে পূর্বকোণকে বলেন, দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা কমে গেছে। মহানগরের সম্মেলন তো দূরের কথা, সম্মেলন করে একটি ওয়ার্ড কিংবা ইউনিট কমিটি করার প্রক্রিয়াও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব উঠে এলে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থাকতো। এখন সেই প্রতিযোগিতা নেই। মূলত যার লবিং যত শক্ত দলে তার কর্তৃত্ব তত বেশি হয়। এমনকি দলের সমর্থন বা মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রেও তদবির হচ্ছে সবচেয়ে বড় যোগ্যতা। একারণে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তারা দলীয় সিদ্ধান্তও অমান্য করে। হানাহানিতে জড়িয়ে পড়ে। এবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও সবাই তাই দেখেছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, যে দ্বন্দ্ব কিংবা সহিংসতা চোখে পড়েছে সেখানে নগর আওয়ামী লীগের নেতা কিংবা কোন এমপি-মন্ত্রী জড়ায়নি। সবাই আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর জন্য শতভাগ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছে। যেকারণে আমরা জয়টা তুলে নিতে পেরেছি। তাছাড়া নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা অতীতেও ছিল। বর্তমানেও আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে। আর ছোট-খাটো যেসব ভুল বুঝাবুঝি আছে তা নিরসন হয়ে যাবে। করোনার প্রকোপ কমে এলে মহানগর এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করব।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট