চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ভাসানচরের পথে আরো ১৫৪৬ রোহিঙ্গার যাত্রা

উখিয়া সংবাদদাতা

২৯ জানুয়ারি, ২০২১ | ৮:১২ অপরাহ্ণ

তৃতীয় দফায় দ্বিতীয় দিনে স্বেচ্ছায় নোয়াখালীর ভাসানচরে যাচ্ছেন আরো ১ হাজার ৫৪৬ রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের উখিয়া থেকে ৩২টি বাসযোগে যাত্রা করেছেন তারা।

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন শিবির থেকে শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুর ও বিকাল ৩টায় উখিয়া ছেড়েছে রোহিঙ্গাদের একটি দল। তাদের চট্টগ্রামের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজোওয়ান হায়াত জানান, এ নিয়ে তৃতীয় দফার দু’দিনে ৭৫২ পরিবারের ৩ হাজার ৩২৪ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে উখিয়া ত্যাগ করেছেন।

কক্সবাজার অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. শামসুদ্দৌজা জানান, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে রোহিঙ্গাদের আরও একটি দলকে চতুর্থ দফায় ভাসানচরে স্থানান্তরের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। স্বেচ্ছায় যেতে আগ্রহী এমন প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে শিবির থেকে চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর জেটিঘাটে, পরে সেখান থেকে ট্রলারে করে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে। শুক্রবার এক হাজার ৭৭৮ রোহিঙ্গা নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে গেলেন।

চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে আজ সকাল ৯টার দিকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে চারটি জাহাজ ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় সেখানে তারা পৌঁছান।

জানা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরে ১২ লাখের অধিক রোহিঙ্গা রয়েছে। তাদের মধ্যে ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুকরা সংশ্লিষ্ট শিবিরে দায়িত্বরত সরকারি কর্মকর্তার (সিআইসি) নিকট তালিকা জমা দেন।

স্বরাষ্ট্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে এ পর্যন্ত দুই দফায় ৪০৬টি পরিবারকে সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে।

গত বুধবার (২৭ জানুয়ারি) ও বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) ভাসানচর যাওয়ার উদ্দেশে রোহিঙ্গারা উখিয়ার ডিগ্রি কলেজের ট্রানজিট ক্যাম্পে পৌঁছেন। ওখান থেকে ১ হাজার ৭৭৮ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ,শিশু বৃহস্পতিবার দুপুর ও বিকালে ৩৫টি বাসযোগে ভাসানচরের উদ্দেশে উখিয়া ত্যাগ করেন। শুক্রবার দুপুর ও বিকাল ৩ টার দিকে আরো দুটি দল ৩২টি বাসযোগে ১ হাজার ৫৪৬ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রাম পৌঁছবেন। ১২টি কার্গো করে রোহিঙ্গাদের মালামাল নিয়ে যাওয়া হয়।

তৃতীয় দফায় দু’দিনে রোহিঙ্গাদের বিশাল দল স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তাদের নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্য গাড়িবহরের সঙ্গে রয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ জানান, দু’দিনে তিন হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার জন্য রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্টরা কাজ দায়িত্ব পালন করেছেন।

এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে এক হাজার ৬৪২ জন ও ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে এক হাজার ৮০৪ জনসহ মোট তিন হাজার ৪৪৭ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রস্ঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পরবর্তী মিয়ানমারে নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে এ দেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয় ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন।

পূর্বকোণ/কায়সার-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট