চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

চোরাই রপ্তানি গার্মেন্টস পণ্যসহ গ্রেপ্তার ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ জুন, ২০১৯ | ২:১৮ পূর্বাহ্ণ

ফ্রান্সে আমদানিকারকের কাছে পাঠাতে জাহাজীকরণ করতে আট কাভার্ডভ্যান ভর্তি জ্যাকেট বন্দরে এনেছিলো নগরীর বাকলিয়ার ডিপস এপারেলস লি.। সাতটি কাভার্ডভ্যানের পণ্য জাহাজে উঠানোর পর দেখা যায় সারির শেষে থাকা কাভার্ডভ্যানটি পণ্যসহ হাওয়া হয়ে গেছে। ঘটনার পর পর রাতেই নগর গোয়েন্দা পুলিশ নগরীর বায়েজিদ এলাকা একটি পরিত্যক্ত গুদাম থেকে জ্যাকেটভর্তি কাভার্ডভ্যান উদ্ধার করেছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা

হয়েছে। ততক্ষণে আমাদানিকারক প্রতিষ্ঠান সীপ্ল্যাকের সাথে ২৫ বছরের ব্যবসায়িক সম্পর্কে ছিড় ধরেছে ডিপস এপ্যারেলসের। ইউরোপজুড়ে ৭৫০টি শোরুম রয়েছে সীপ্ল্যাকের। কয়দিন পর পর কাভার্ডভ্যান থেকে রপ্তানিপণ্য চুরির কারণে বিশ^বাজারে নষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি।
সোমবার রাতে বন্দরের এছাকডিপো এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ডিপস এপারেলস লি. এর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, ফ্রান্সের সীপ্ল্যাকের সাথে ২৫ বছররের অধিক সময় ধরে তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক। নগরীর বাকলিয়ার নতুন চাক্তাই এলাকায় তাদের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী অবস্থিত। সিপ্ল্যাক কোম্পানির কাছে পাঠাতে বাকলিয়া থেকে তৈরিকৃত জ্যাকেট নিয়ে আটটি কাভার্ডভ্যান বাকলিয়া থেকে বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। রাত আনুমাকি এগারোটার সময় সাতটি ট্রাক বন্দরে পৌছালেও কুষ্টিয়া-ট-১১-০২০০ নম্বরের কাভার্ডভ্যানটি যথাসময়ে পৌঁছেনি। পরে গাড়িটির চালক রুবেলকে ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
গার্মেন্টস ব্যবসায়ী জসিম জানান, ম্যানেজারের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা নগর গোয়েন্দা পুলিশের শরনাপন্ন হই। তারা অভিযান চালিয়ে জ্যাকেটভর্তি কাভার্ডভ্যানটি উদ্ধার করেছে। একটি কাভার্ডভ্যানের কারণে অন্য সাত কাভার্ডভ্যানের জ্যাকেটও আমরা যথাসময়ে শিপমেন্ট করতে পারিনি। এতে আমাদের আর্থিক ক্ষতি যেমন হয়েছে তেমনি বহির্বিশে^ বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও যথেষ্ট নষ্ট হয়েছে।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মির্জা সায়েম মাহমুদ জানান, রপ্তানিপণ্যসহ কাভার্ডভ্যান হাওয়া হয়ে যাবার বিষয়টি জানার পর আমরা রাতেই অভিযানে নামি। গোপন সংবাদের জানতে পারি জ্যাকেটভর্তি কাভার্ডভ্যানটি বায়েজিদ বোস্তামী থানার আমিন জুট মিলের উত্তর গেটের দুই নম্বর গলির মৃধাপাড়ার হক ফুড এজেন্সি পরিত্যক্ত গোডাউন থেকে কাভার্ডভ্যানটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় তিনশত ষাট কার্টন জ্যাকেট। প্রতি কার্টনে চার হাজার তিনশো পিস জ্যাকেট ছিলো। এসব জ্যাকেটের বাজার মুল্য আটত্রিশ লক্ষ আটাশি হাজার টাকা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন, বরগুনার পাথরঘাটার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে সাহাদাত হোসেন (২৮), বি বাড়িয়ার কসবা থানার মৃত শামছুদ্দিনের ছেলে ওবায়দুল হক (৩৭), মাদারীপুরের চরমুগোরিয়া গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে সোহাগ হোসেন (৩২), চকরিয়ার ঈদগাঁ হাজী পাড়ার এজাহার মিয়ার ছেলে সিরাজ মিয়া (২৮), গাড়ি চালক রুবেল (২২), ও বরিশালের মেহেদীগঞ্জের শাহাজাহান ডাক্তারের ছেলে মো. সুমন (৩০)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তারা জানিয়েছে, গাড়ি চালক রুবেল নিজেই রপ্তানীপণ্য চুরির মুল পরিকল্পনাকারি। কাভার্ডভ্যানের দরজায় লাগানো সিলগালা করা তালা না খুলে তারা দরজার নাট খুলে ৩৬০টি কার্টন খুলে চার হাজার তিনশো ২০টি জ্যাকেট সরিয়ে নেয়। পরে পরিত্যক্ত গুদামে তল্লাশি করে এসব জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে নগরীর বাকলিয়া থানায় ডিপস এপ্যারেলস লি. এর ম্যানেজার মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট