চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

মধ্যরাত থেকে বন্ধ হচ্ছে প্রচারণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ জানুয়ারি, ২০২১ | ১২:১০ অপরাহ্ণ

আজ সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীরা। দম ফেলার ফুরসত মেলেনি এই কদিন। প্রচারণার শুরু থেকেই ছিল উত্তাপ-উত্তেজনা, সহিংসতা ও খুনোখুনি। ভোটগ্রহণ নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন প্রার্থী ও ভোটাররা। করোনাসংক্রমণের কারণে স্থগিত করা হয়েছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। গত ৮ জানুয়ারি থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়। ভোটের মাঠে মেয়র পদে প্রার্থী রয়েছেন সাতজন। সংরক্ষিত ১৪ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আছেন ৫৭ জন। ৪১ সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৩৯ ওয়ার্ডে। ১৮ নং ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন সাবেক কাউন্সিলর মো. হারুনুর রশিদ। এক প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ৩১ নং আলকরণ ওয়ার্ডের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। ৩৯ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন ১৬৮ জন। গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গত ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটির ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে ২১ মার্চ প্রথম দফায় এবং ১৪ জুলাই দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়।

চসিক নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার নয় লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন ও মহিলা ভোটার নয় লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ ভোট। ৭৩৫ ভোটকেন্দ্রে ভোট দেবেন ভোটাররা। এরমধ্যে স্থায়ী ৭৩৩ ও অস্থায়ী কেন্দ্র দুটি। ভোটকক্ষ চার হাজার ৮৮৬টি। স্থায়ী ভোটকক্ষ ৪,১২২টি ও অস্থায়ী কক্ষ ৭৬৪টি। সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হবে।

রিটার্নিং অফিসার ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জান বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী আজ সোমবার রাত ১২টা থেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।’

মেয়র পদে সেই অতিপরিচিত নৌকা প্রতীকে মাঠে রয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরী। ধানের শীষ প্রতীকে রয়েছেন বিএনপি আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। এছাড়াও মাঠে রয়েছেন ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী মাওলানা এম এ মতিন (মোমবাতি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আবুল মনজুর (আম), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা), ইসলামিক ফ্রন্টের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী (হাতি)।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরশন নির্বাচনে এবার প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একই সঙ্গে সবকটি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ করা হবে। তবে কাউন্সিলর প্রার্থীরা লড়বেন নিজস্ব প্রতীক নিয়ে। তবে এবার কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে একক প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে বড় দুই দল আ. লীগ ও বিএনপি। তবে সরকারি দল আওয়ামী লীগে বেশির ভাগ ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।

প্রচারণার শুরু থেকে পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে নগরীর পাড়া-মহল্লা। মাইকিং, প্রচার-প্রচারণা সরগরম হয়ে উঠেছে নগরী। শেষমুহূর্তে প্রচারণা তুঙ্গে রয়েছে। প্রধান দুই দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি প্রচারণায় ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে। গতকাল টিভি চলচিত্র নায়ক-নায়িকারা নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় অংশ নেন।

প্রচারণার শুরু থেকেই সংঘাত-সহিংতা লেগে রয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের ঘিরে উত্তাপ-উত্তেজনা লেগেই রয়েছে। দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ২৮নং পাঠানটুলী ওয়ার্ডে আজগর আলী বাবুল নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ লেগেই রয়েছে।

এদিকে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে উত্তাপ বেড়েছে। বিএনপি ভোটগ্রহণ নিয়ে শুরু থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। সংঘাত-সংঘর্ষ ও সহিংসতার কারণে ভোট নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন ভোটাররাও।

প্রচারণার শুরু থেকে বড় দুই দল ভিন্নভাবে প্রচারণায় নেমেছে। সরকারি দল আওয়ামী লীগ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ও বিএনপি ভোটারাধিকার, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্লোগান নিয়ে মাঠে নেমেছিল।

নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে মন্ত্রী-সাংসদেরা প্রচার-প্রচারণায় নামতে পারবেন না। তারপরও আওয়ামী লীগের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা, মন্ত্রী ও সাংসদ চট্টগ্রামের অবস্থান করেছিলেন। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও দায়ের করেছিলেন।

 

পূর্বকোণ/পি-মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট