চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অমীমাংসিতই থেকে গেল ‘বিদ্রোহী ইস্যু’

ইফতেখারুল ইসলাম 

২৪ জানুয়ারি, ২০২১ | ২:০৭ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে মাথাব্যথার শেষ নেই। নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে বিদ্রোহীদের নিয়ে দলীয় সমর্থিত প্রার্থীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ তত চওড়া হচ্ছে। বার বার দাবি উঠেছে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করার। এমনকি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে চিঠিও লিখেছে। কিন্তু আদৌ কি তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা সম্ভব ? এমন প্রশ্ন তুলেছেন কোন কোন প্রার্থী। কারণ অনেক প্রার্থী আছেন যারা আওয়ামী লীগ করেন কিন্তু তাদের দলীয় কোন পদ নেই।

নগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক পূর্বকোণকে বলেন, ৬ ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। এক ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে গেছে। আলকরণ ওয়ার্ডে নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। বাকি ওয়ার্ডসমূহের ৫২ জন বিদ্রোহী প্রার্থীর নামের তালিকা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে পাঠানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনে যাদের পদ- পদবী আছে তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যাদের পদবী নেই তাদেরকে তালিকায় রাখা হয়নি। তবে তিনি একথা স্বীকার করেন যে, যাদের পদবী নেই কিন্তু এলাকায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা হিসেবে পরিচিত তাদেরও কিছু কর্মী সমর্থক আছে। তারাও কিছু ভোট পাবেন। তারা নির্বাচন না করলেও ওই ভোটগুলো আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী পেতেন। একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর সাথে আলাপকালে তারা জানান, তারা মূলত আওয়ামী লীগকে ভালবাসেন বলেই এই দলের রাজনীতি করেন। দলের কর্মসূচিতে যোগ দেন। কিন্তু তাদের কোন পদ- পদবী নেই। এমনকি কেউ কেউ প্রাথমিক সদস্য ফরমও পূরণ করেননি। যেহেতু বিভিন্ন সময় দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন তাই এলাকার লোকজন তাদেরকে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবেই জানে।

এছাড়া কিছু বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন যারা আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনসমূহের প্রাথমিক সদস্য। কেউ কেউ নির্বাহি কমিটিতে আছেন। বিদ্রোহী হিসেবে দুইটি ওয়ার্ডে নগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য রয়েছেন। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ শহীদুল আলম আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন। এই ওয়ার্ডে নির্বাচন করছেন মোহাম্মদ সোয়েব খালেদ। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, দলীয় সমর্থনের জন্য ঢাকায় যাননি। তাছাড়া আওয়ামী লীগ বা তার অঙ্গসংগঠনেও তার কোন পদ-পদবী নেই। তিনি আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তাকে বহিষ্কারের সুযোগ নেই। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এস এম দিদারুল আলম বলেন, তিনি আওয়ামী লীগ করেন। কিন্তু পদ- পদবী নেই। তাছাড়া দলীয় সমর্থন পাওয়ার জন্য ঢাকায় যাননি। স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ এমপি, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কামাল হোসেনসহ দলের অনেক বড় বড় নেতারা বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এমনকি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সুপারিশ করার। এই সুপারিশের চিঠিও পাঠানো হয়েছে। তাতে কোন কাজ হয়নি। তবে কোন কোন ওয়ার্ডে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী নেতার প্রচেষ্টায় অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী নিষ্ক্রিয় হয়েছেন। সেই সংখ্যাও খুব বেশি নয়। কোন কোন ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বেশ দাপটও দেখা যাচ্ছে। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারেও তার বেশ আশাবাদী দেখা গেছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট