চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ভোটের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ তারপরও আশা দেখাচ্ছে ইসি

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন 

২৩ জানুয়ারি, ২০২১ | ১২:০৩ অপরাহ্ণ

চার দিন পরই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। প্রচারণার শুরু থেকে প্রতিনিয়ত আচরণবিধি লঙ্ঘন, সংঘাত-সহিংসতা, হামলা, সংঘর্ষ ও খুনোখুনির ঘটনা লেগেই রয়েছে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরমধ্যেও সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা দেখাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই কঠোর বার্তা দিয়েছেন কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে। ৬ পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলির পরও আরও কয়েক জন পুলিশের উপর নজরদারি রাখছে ইসি।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘পরিবেশ একটু উত্তপ্ত হওয়ার পর শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। আমরা খুনোখুনি চায় না। সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন শেষ করতে চায়। এ জন্য যা যা করা প্রয়োজন সব করবে ইসি। ইতিমধ্যেই সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ৬ পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। আরও কয়েক জনের উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’

রিটার্নিং অফিসার বলেন, পাহাড়তলী ওয়ার্ডে এক মহিলা প্রার্থী পোস্টার ছেঁড়া ও প্রার্থীকে নিয়ে কটূক্তি করার অপরাধে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও কয়েকটি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকেরা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে নির্বাচনে পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, নগরীর অন্তত ১৫ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের ঘিরে নির্বাচনী পরিবেশ উত্তপ্ত রয়েছে। হামলা, ভাঙচুর ও সহিং সতার অভিযোগ-পাল্টাপাল্টি অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগগুলোর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও ১০টি ওয়ার্ডে বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

নির্বাচন বিশ্লেষকদের অভিমত, ইসির হাতে ক্ষমতা থাকলেও প্রয়োগ করছে না। ফলে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক এডভোকেট আকতার কবীর চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশন হচ্ছে ঠুঁটো জগন্নাথ। তাদের কাজই হচ্ছে আশ্বাস দেওয়া। প্রচারণা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এমন কি কোনো প্রার্থীকে শোকজ বা নোটিশ করেছে। একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আরও ৫ জন সংযত হতেন। অপমানবোধ ও লজ্জিত হতেন। তা তো করেনি কমিশন। এসব কারণে নির্বাচন কমিশনের উপর মানুষের অনীহা, সন্দেহ, সংশয় ও আস্থার সংকট রয়েছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত। এভাবে চলতে থাকলে গণতন্ত্র, দেশ ও জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এদিকে, শুরু থেকেই সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আসছে অন্যতম বড় দল বিএনপি। তারা বলছে, নির্বাচন কমিশনে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করার পরও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে। কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ইতিমধ্যেই বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মীদের। গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন নেতাকর্মীরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেছেন, জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি ছড়াতে বিএনপির প্রার্থীর ওপর হামলা করা হচ্ছে। কাউন্সিলর প্রার্থীদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ইসি সবার জন্য সমান সুযোগ অতীতেও নিশ্চিত করেনি, এখনো করছে না।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট