চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

হাটহাজারীতে বিপর্যয়ের মুখে কৃষিজমি

নিজস্ব সংবাদদাতা, হাটহাজারী

২২ জানুয়ারি, ২০২১ | ১:৩৯ অপরাহ্ণ

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবাধে কৃষি জমির টপসয়েল ব্যবহৃত হচ্ছে বসতভিটা ও পুকুর ভরাট কাজে। এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকার পরিবেশের পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন ও ফসল বৈচিত্র্য।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌরসভার আলমপুর ফায়ার স্টেশনের অফিসের পশ্চিমে কৃষি জমির টপসয়েল প্রতিদিন ১৫/২০ জন শ্রমিক কেটে ৪/৫টি মিনি ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করার পরও বন্ধ হচ্ছে না মাটি কাটা। এছাড়া উপজেলার পৌরসভার ১১ মাইল এলাকার পশ্চিমে ফরহাদাবাদ, ধলই, মির্জাপুর ও চারিয়ার পুর্বে চিকনদণ্ডির বড়দীঘির পূর্ব এলাকা, শিকারপুর, দক্ষিণ মার্দাসা, ১ নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওর্য়াডসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষি জমির উপরিভাগের অংশ কেটে ট্রাক-ট্রলি করে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

আর এসব মাটি যাচ্ছে বসতভিটা, পুকুর ও ডোবা ভরাট কাজে। এসব স্থানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাটি কাটার গভীরতার পরিমাণ ৫ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে কোথাও কোথাও অর্থনৈতিক ও অনৈতিক আগ্রাসনে পার্শ্ববর্তী মালিকের জমিও নষ্ট হচ্ছে। কৃষি বিজ্ঞানের ভাষায় যেকোন ফলনযোগ্য জমির উৎপাদন শক্তি জমা থাকে মাটির ৬ থেকে ১৮ ইঞ্চি গভীরতায়। মাটির এই অংশেই যেকোন ফসল বেড়ে ওঠার গুণাগুণ সুরক্ষিত থাকে। বীজ রোপণের পর এই অংশ থেকেই ফসলটি প্রয়োজনীয় উপাদান গ্রহণ করে। এই অংশটি একবার কেটে নিলে সে জমির আর মৃত্তিকা প্রাণ থাকে না। এমনকি ওই জমিতে ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে কোনো ফসল বেড়ে উঠবে না। এতে জমিটি পরিত্যক্তই হয়ে যায়।

জানা যায়, এবারের শুকনো মৌসুমের শুরুতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেশ কয়েকটি স্থানে টপসয়েলসহ পাহাড়ি মাটি বিক্রি রোধে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে। এছাড়া মাটি কাটার সরঞ্জাম জব্দসহ নগদ টাকা জরিমানা আদায় করেন। তারপরেও কিছুতেই থামছে না মাটি ব্যবসায়ী দুর্বৃত্তদের অপতৎপরতা। ইটভাটা ও বসতভিটায় টপসয়েলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী কৃষকদের (জমির মালিক) বিভিন্ন কৌশলে প্রলুব্ধ করে সামান্য অর্থের বিনিময়ে তা উজাড় করছে। ফলে কৃষকরা ধরে রাখতে পারছেন না তাদের জমির স্বাভাবিক ফলন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ আবদুল্লাহ ওয়াহেদ বলেন, গ্রামের সহজ সরল সাধারণ মানুষদের অসচেতনতার সুযোগে এক শ্রেণির মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষি সম্পদের সর্বনাশ করছে। জমির মালিকরা দীর্ঘদিন থেকে জমিতে চাষাবাদ না করার কারণে মালিককে না জানিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে মাঠ পরিদর্শন করে দ্রুত কৃষকদের বুঝানোর চেষ্টা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাটি কাটার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট