চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

অবকাঠামো পরিবর্তনসহ ব্যবসায়ীক আস্থা ফিরে আসুক

ইফতেখারুল ইসলাম

২০ জানুয়ারি, ২০২১ | ৬:৪৯ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তাদের মধ্য থেকে একজন নির্বাচিত হবেন। তার কাছে বন্দরনগরীর ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ এবং আছদগঞ্জের ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা অনেক। তারা চান মেয়রের নেতৃত্বে এই ব্যবসাকেন্দ্রের অবকাঠামোর পরিবর্তন হোক। ব্যবসায়িক আস্থা ফিরে আসুক। একইসাথে সিটি গভর্মেন্ট প্রচলনের মাধ্যমে মেয়রের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হোক সেই প্রত্যাশাও করেন।

 

ছিটেফোঁটাও পূরণ হয়নি অতীতের প্রতিশ্রুতির

আবুল বশর
সিনিয়র সহসভাপতি
খাতুনগঞ্জ ট্রেড এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন

 

মেয়রের কাছে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ-আছদগঞ্জের ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা অনেক। আমি বলছি না মেয়র সব প্রত্যাশা পূরণ করবেন। তবে একথা সত্য যে, অতীতে যারা মেয়র ছিলেন তারা অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তার ছিটেফোঁটাও পূরণ করেননি। দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের এই প্রাণকেন্দ্রটির শত বছরের ঐতিহ্য আজ হারাতে বসেছে। কিছু খারাপ লোক এখানে ঢুকে গেছে। কোটি কোটি টাকা মেরে দিয়ে আস্থার সংকট সৃষ্টি করছে। মেয়র ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়ে এই সংকট দূরীকরণে উদ্যোগ নিতে পারেন। তাছাড়া সরু সড়কের কারণে ট্রাফিক জ্যাম একটি নিত্য ঘটনা। বিদ্যুতের সমস্যা আছে। এতগুলো আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে তার নিরাপত্তা বিধান করা উচিত।

 

ব্যবসায়ীদের সমস্যাগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরতে হবে

সৈয়দ ছগির আহমদ
সাধারণ সম্পাদক
খাতুনগঞ্জ ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে প্রত্যাশা আছে। বড় প্রত্যাশা। যদিও তার দায়িত্ব আবর্জনা, নালা নর্দমা পরিষ্কার, রাস্তাঘাট, সড়কবাতি আলোকায়ন ইত্যাদি। আমার প্রত্যাশা হল পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক রাজধানী
বাস্তবায়ন। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সমস্যাগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক রাজধানী বাস্তবায়নের বাধাগুলো দূর করতে হবে। এটা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আদায় করে নিতে হবে। তাছাড়া অনুন্নত ওয়ার্ডগুলোকে উন্নত ওয়ার্ডের সমপর্যায়ে নিয়ে যেতে কাজ করতে হবে। সিটি গভর্মেন্ট প্রচলন করা গেলে, মেয়রের ক্ষমতা বাড়বে। সিটি গভর্মেন্ট করা না গেলে মেয়রকে পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদা দেয়া উচিত। কারণ এখন চট্টগ্রাম শহরের অন্যান্য সংস্থাগুলো মেয়রের কথা শুনতে চান না। সমন্বয় সভায় উপস্থিত পর্যন্ত থাকেন না। সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন না। এক্ষেত্রে মেয়রের কিছুই করার থাকে না।

 

স্লুইস গেটের কাজ দ্রুত শেষ করে বোট চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে

ওমর আজম
সাধারণ সম্পাদক
চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতি

আগামীর মেয়রের কাছে তার প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বলেন, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের প্রাণ হল চাক্তাই খাল। এই খাল দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসা বাণিজ্য চলে আসছে। বর্তমানে নির্মাণাধীন স্লুইস গেটের কারণে খালে বোট প্রবেশ করতে পারছে না। তাই মালামালও নিতে পারছে না। করোনার কারণে এমনিতেই ব্যবসা মন্দা। স্লুইস গেটের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে বোট চলাচলের ব্যবস্থা করার প্রত্যাশা করেন। একইসাথে ব্রিটিশ আমল থেকে এই বাণিজ্য কেন্দ্রের অবকাঠামোর পরিবর্তন হয়নি। তারা চান যিনি মেয়র নির্বাচিত হবেন তিনি এই বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন। তাছাড়া এখানে ট্রাক টার্মিনাল নেই। কিন্তু টার্মিনাল নির্মাণের মতো জায়গা আছে। এর জন্য মেয়রকে উদ্যোগ নিতে হবে।

 

ব্যবসায়ীদের প্রথম চাওয়া নতুন করে ট্যাক্স যাতে না বাড়ে

মো. জাকের হোসেন
সাধারণ সম্পাদক
চট্টগ্রাম আয়রন স্টিল উৎপাদক ও বণিক সোসাইটি

তিনি চান ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ। তিনি মেয়রের কাছে প্রত্যাশা প্রসঙ্গে বলেন, ব্যবসায়ীদের প্রথম চাওয়া হল নতুন করে ট্যাক্স যাতে না বাড়ে। এছাড়া সন্ত্রাস ও জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি চান। জলাবদ্ধতার কারণে প্রতিবছর তাদের অনেক টাকার পণ্য নষ্ট হয়ে যায় বলে উল্লেখ করেন। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আরেক সমস্যা হলো সারারাত ধরে মাটি ও বালির ট্রাক চলাচল করা। যেকারণে পুরো ব্যবসাকেন্দ্রটি ধুলোবালিতে ভরে যায়। দেশের ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইকে তিনি যানজটমুক্ত দেখতে চান।

পূর্বকোণ/পি-মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট