চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

চসিক নির্বাচন: আচরণবিধি লঙ্ঘন বেড়েই চলেছে

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন 

১৮ জানুয়ারি, ২০২১ | ১২:০০ অপরাহ্ণ

প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনাও। বিশেষ করে কাউন্সিলর পদ দল নিরপেক্ষ হলেও দলীয় পরিচয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের বেশির ভাগই দল মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। পোস্টার-ব্যানার ও লিফলেটে দল মনোনীত প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একই সঙ্গে মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে কাউন্সিলর প্রার্থীদের যৌথ ব্যানার টাঙিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান পূর্বকোণকে বলেন, ‘কাউন্সিলর পদে হচ্ছে দল নিরপেক্ষ নির্বাচন। কোন কাউন্সিলর প্রার্থী দল মনোনীত বলে প্রচারণা চালাতে পারবেন না’। তিনি বলেন, কয়েক জন প্রার্থী দল মনোনীত প্রার্থী দাবি করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অনেককে আমরা নোটিশ দিয়ে সতর্ক করেছি। কাউকে আবার জরিমানাও করা হয়েছে। দল মনোনীত পোস্টার-ব্যানার সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতি অনুরোধ করেছেন তিনি।

সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের বেশির ভাগই দল মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও লিফলেটে দল মনোনীত বলেও উল্লেখ করেছেন। আবার অনেক প্রার্থী আরও এক ধাপ এগিয়ে রয়েছেন। দলীয় প্রধানের ছবিও জুড়ে দিয়েছেন।

বিভিন্ন ওয়ার্ডে দেখা যায়, বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় প্রার্থীরা একসঙ্গে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, দল মনোনীত মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে সংরক্ষিত ও সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদেরও একসঙ্গে ছবি ছাপানো ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে।

কাউন্সির পদে দল মনোনীত প্রার্থী দাবি করায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ভোটের মাঠে। বিশেষ করে সরকারি দল আওয়ামী লীগের দল সমর্থিত প্রার্থী ছাড়াও বেশির ভাগ ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এ নিয়ে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করেছে।

রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্র জানায়, ৩৩নং ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হাসান মুরাদ বিপ্লব আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রচারণা পোস্টার-ব্যানারে সালাউদ্দিন নিজেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

১৭নং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ মোয়েব খালেদও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. শহীদুল আলমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পোস্টারে দলীয় প্রধানের ছবি ছাপানোর অভিযোগ করেছেন তিনি। ১২নং সরাইপাড়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবের আহমদ দল সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ দায়ের করেছেন। নুরুল আমিনও পাল্টা সাবের আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

প্রচারণার শুরু থেকে কাউন্সিলর পদে দল মনোনীত ও দলীয় প্রধানে ছবি ছাপানোর অভিযোগ আসলেও ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কমিশন। এতে দিন যত এগিয়ে আসছে, বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগও তত বাড়ছে।

শুধু সাধারণ কাউন্সিলর পদে নয়। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত অধিকাংশ প্রার্থী নিজেদের দলীয় প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। পোস্টার, ব্যানারে দলের মনোনীত প্রার্থী দাবি করে পোস্টার ও ব্যানার সাঁটিয়েছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, কাউন্সিলর পদে নির্বাচনী পোস্টার-ব্যানারে দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রচারণার অভিযোগ পেয়ে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের সতর্ক করা হয়েছে। এসব পোস্টার সরিয়ে ফেলার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট