চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ফেসবুকে পোস্ট, নির্বাচন নাকি মাদকবিরোধী পোস্টার ছেঁড়া

কেন খুন হল রোহিত?

ইমাম হোসাইন রাজু

১৬ জানুয়ারি, ২০২১ | ১১:১১ পূর্বাহ্ণ

মাদকবিরোধী পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করেই ছুরিকাঘাতে আহত হন আশিকুর রহমান রোহিত। জড়িত সকলেই এলাকায় মাদকসেবী ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত। এমন কথা উল্লেখ করেই বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত রোহিতের বড় ভাই জাহিদুর রহমান। তিনজনের নাম উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন তিনি।

যদিও শেষ পর্যন্ত গতকাল (শুক্রবার) ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সক্রিয় এ ছাত্রলীগ কর্মীর। যা এখন রূপ নেয়ার কথা হত্যা মামলায়। তবে আসলেই কি মাদকবিরোধী পোস্টার ছেঁড়ায় কাল হলো রোহিতের? রোহিতের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নতুন করে যোগ হয়েছে আরও দুটি প্রশ্ন। এর একটি হল, নির্বাচনকেন্দ্রিক এবং অন্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত ২৭ নভেম্বর দেয়া তার একটি পোস্ট। যদিও পুলিশ নির্বাচনী সহিংসতাকে নাকচ করে জোর দিচ্ছে ফেসবুক পোস্ট ও মাদকবিরোধী পোস্টারিংকে।

প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, যেদিন রোহিত ছুরিকাহত হন- সেদিন ছিল চসিক নির্বাচনের প্রচারণার প্রথম দিন। ঘটনার সময় রোহিত দেওয়ানবাজার এলাকায় নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর গণসংযোগে অংশ নিয়েছিলেন। আর সেখান থেকে ফেরার পথেই ঘটে এ ছুরিকাঘাতের ঘটনা। তাই সে কারণেই ছুরিকাঘাতের ঘটনাকে নির্বাচনী সহিংসতার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দাবি করছেন কেউ কেউ।

রোহিতের আরেক বড় ভাই জাবেদও রেজাউল করিমের গণসংযোগ শেষে বাসায় ফেরার পথে ঘটনা ঘটে বলে পূর্বকোণের কাছে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নৌকার গণসংযোগ শেষে এক আত্মীয়ের বাসায় যাওয়ার কথা ছিল। ওই সময়ে রোহিতকে একা পেয়ে তার উপর হামলা চালানো হয়।

এছাড়া গত ২৭ নভেম্বর ‘আশিকুর রহমান রোহিত’ নামে নিজ ফেসবুকে পোস্ট দেয় রোহিত। তাতে লিখা ছিল, ‘অন্যায়ের প্রতিবাদ করা কি অপরাধ। চকবাজার ডিসি রোড বাম্পার কলোনির একজন কিশোর গ্যাং লিডার, ছিনতাইকারী ইট-বালির ব্যবসার নামে চাঁদাবাজ জুয়ার বোর্ড চালাচ্ছে। তার অপকর্মে বাধা দেওয়ার কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানোর চেষ্টা করছে। আজকের পর থেকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা ভুল, অপরাধী সংঘ দেওয়া লাভ। অন্যায়ের প্রতিবাধ করতে গেলে এভাবে বাঁশ খাওয়া প্রয়োজন’।

পোস্টে ইট-বালির ব্যবসায়ীর কথা উল্লেখ করা হলেও ওই ব্যবসায়ী কে- তা স্পষ্ট করেননি রোহিত। পুলিশের ধারণা- মামলার আসামি মহিউদ্দিনই ওই এলাকায় ইট-বালির ব্যাবসা করে আসছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন পোস্ট দেওয়াটাও তার জন্য কাল হয়েছে বলে সন্দেহ কারও কারও।

জানতে চাইলে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন পূর্বকোণকে বলেন, ‘কি কারণে এ হত্যাকাণ্ড বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। তবে যেহেতু পরিবারের পক্ষ থেকে মাদকবিরোধীতার কথা উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে, তাই সেই সূত্রকে সামনে রেখেই তদন্তের কাজ এগিয়ে চলছে। পাশাপাশি ফেসবুক পোস্টকেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তবে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারলেই মূল রহস্য বের হবে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে’।

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট