চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রাঙামাটির ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতে আবারো গাছের খুঁটি দিয়ে পাইলিং

লাখ লাখ টাকা অপচয়ের অভিযোগ

পূর্বকোণ প্রতিনিধি হ রাঙামাটি অফিস

১৮ জুন, ২০১৯ | ২:১৭ পূর্বাহ্ণ

প্রচ- বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাতের ফলে রাঙামাটিতে গত ২০১৭ সালের ১৩ জুন পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতে আবারো বহুল আলোচিত গাছের বল্লি দিয়ে পাইলিং করা হচ্ছে, পাহাড় ধ্বসের পর জরুরি ভিত্তিতে সড়ক সচল করতে ব্যয় করা হয় ১৬ কোটি টাকা, স্থায়ী রক্ষাপদ কাজ করার কথা থাকলেও এবার আবারো ২ কোটি টাকা ব্যয়ে গাছের খুঁটি বা বল্লি গেড়ে পাইলিং করা হচ্ছে। এতে বর্ষায় জনগনের আতংক যেমন কাটছে না, তেমনি সরকারের লাখ লাখ টাকা নয় ছয় হওয়ার আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে বলে স্থানীয় সচেতন জনগণের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৩ জুনের পাহাড় ধ্বসের দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো তাৎক্ষণিক সাময়িক মেরামত কাজ করা হয়েছিল গাছের খুঁটির পাইলিং দিয়ে আর মাটির বস্তা ভরাট করে। এরই মধ্যে ধ্বসে গেছে ওইসব পাইলিং। ফলে আবার বেহাল দশায় ঝুঁকিতে সড়কগুলো। তৈরি হয়েছে, এসব সড়ক যে কোনো সময় ভেঙে ধ্বসে যাওয়ার আশঙ্কা। আবার শুরু হয়েছে বর্ষা। এ অবস্থায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ বিভিন্ন আভ্যন্তরীন সড়ক মেরামত ও পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত করতে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার আবারও অস্থায়ী মেরামত কাজ করা হচ্ছে। শুধু গাছের খুঁিট দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সড়কগুলো সাময়িক মেরামত কাজে দুই কোটি খরচ করছে, রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
তথ্যসূত্র মতে, ওই দুর্যোগের পর এসব সড়কের কেবল সাময়িক সংস্কার কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। তখনও বেশিরভাগ স্থানে গাছের খুঁটি দিয়ে করা হয়েছে পাইলিং কাজ। এ ছাড়া রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ির শালবনে নির্মিত অস্থায়ী বেইলি সেতুতে ব্যয় হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। অনেকের মন্তব্য, ওইসব টাকা ব্যয় করা হয়েছে অযথা। আবার অযথা দুই কোটি টাকা খরচ করে গাছের খুঁটি গেড়ে সড়কগুলোর মেরামত কাজ করছে সরকারের রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এতে সওজ রাঙামাটি অফিসের সংশ্লিষ্ট কয়েক কর্মকর্তা- কর্মচারীর বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অনেক সড়কে নামে মাত্র গাছের বল্লি দিয়ে পাইলিং করা হচ্ছে, সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তা সংকটের সুযোগ নিচ্ছে অনেকে।
রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্যমতে, গতবারের পাহাড় ধ্বসের ঘটনায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের ৩১ স্থানে বড় ধরনের ভাঙন ও গর্তের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও শহরের মধ্যে ৮ স্থানে ভাঙন ও গর্ত হয়েছে। মূল শহরসহ গোটা রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ভাঙন ও গর্ত হয়েছে মোট ৩৯ স্থানে। সেগুলোর সাময়িক মেরামত কাজ করা হয়েছে গাছের খুঁটি গেড়ে পাইলিং দিয়ে। এছাড়াও বিলীন হওয়ায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ির শালবনে অস্থায়ীভাবে যান চলাচলের জন্য নির্মিত হয়েছে একটি অস্থায়ী বেইলি সেতু। এই সেতুর ব্যয় নিয়ে সে সময় জনমনে অনেকের মন্তব্য, নড়বড়ে হওয়ায় যে টাকা ব্যয় করা হয়েছে, সেগুলো সরকারি টাকা আত্মসাতের সামিল।অপরদিকে, বৃষ্টিতে গাছের খুঁটির পাইলিং ও মাটি সরে সব ভেঙে গেছে। এরপরও আবার গাছে খুঁটি গেড়ে পাইলিং দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে, রাস্তার ওইসব স্থান। ফলে একইভাবে কিছু দিনের মধ্যেই ভেঙে ধসে যাবে গাছের খুঁটির পাইলিং।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট