চট্টগ্রাম বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩

১৭ জুন, ২০১৯ | ২:৪০ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব সংবাবদাতা , চবি

অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে চিঠি

মাস পার হলেও দুদকের চাওয়া দশটি তথ্য দেয়নি চবি কর্তৃপক্ষ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে টেন্ডার ফরম বিক্রি, পছন্দের প্রার্থীকে কার্যাদেশ প্রদান, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তদন্ত করতে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক থেকে দেওয়া চিঠিতে গত ২৩ মে’র মধ্যে তথ্য প্রদান করতে বলা হলেও একমাস অতিবাহিত হওয়ার পরও বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনো কোন তথ্য দেয়নি কমিশনকে।
এদিকে, তথ্য না দেওয়ায় নতুন করে আবার চিঠি ইস্যু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত কর্মকর্তা।
গত ২০ মে পাঠানো দুর্নীতি দমন কমিশনের চিঠিতে দশটি বিষয়ের তথ্য চাওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। তথ্য চাওয়া বিষয়সমূহ হলো, বিশ^বিদ্যালয়ের জননেত্রী শেষ হাসিনা হল এবং দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের নির্মাণ প্রকল্পের বরাদ্দপত্র থেকে শুরু করে টেন্ডার প্রক্রিয়ার সকল নথিপত্রের সত্যায়িত কপি, উপাচার্য কর্তৃক বিভিন্ন সভায় অংশ গ্রহণের জন্য তাকে প্রদত্ত সিটিং এলায়েন্স প্রদানের নীতিমালা এবং ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে অংশ নেওয়া সকল সভার সিটিং এলাউন্স বিবরণীর সকল তথ্য, ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চবির বিভিন্ন নালা, নর্দমা, পাহাড় ও আগাছা পরিষ্কার এবং উপাচার্যের বাস ভবন মেরামতের জন্য বরাদ্দপত্র এবং দরপত্রের বিজ্ঞপ্তিসহ সকল তথ্য, উপাচার্যের সময়কালে বিশবিদ্যালয়ের বিভিন্ন নিয়োগে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলে তার সত্যায়িত কপি, সরকারি নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকা অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এডহক মাস্টার রোল ভিত্তিতে নিয়োগের নীতিমালাসহ নিয়োগকৃতদের সকল তথ্য, সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেনকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রদান সংক্রান্ত বিভাগীয় প্লানিং কমিটির সুপারিশসহ পদোন্নতি প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, সহকারী প্রক্টর আনোয়ারের স্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরে সহকারী কিউরেটর পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিসহ নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, জাদুঘরে সহকারী কিউরেটর পদে নিয়োগের যোগ্যতা সংক্রান্ত বিধির কপিসহ নিয়োগ নীতিমালার কপি, সহকারী প্রক্টর আনোয়ার কারাভোগরত অবস্থায় তাকে সাসপেন্ড করা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত কিনা সে সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ারের কারাভোগরত অবস্থায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচে জামিন করানো হয়ে থাকলে সে সংক্রান্ত বিলের কপি চায় দুদক। এসব বিষয়ে দুদক গত মাসের ২৩ মে’র মধ্যে তথ্য প্রদান করার নির্দেশ বেঁধে দেন। কিন্তু কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে তথ্য দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে গত ৩০ মে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয়। যদিও এখনো কোন কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি ওই কমিটি।
এসব বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১, চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের অনেকগুলো অভিযোগ আমাদের কাছে আছে। সর্বশেষ গত ২০ মে যে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে সে চিঠির উত্তর এখনো আমরা পাইনি। তবে আগামী দু’একদিনের মধ্যে নতুন করে আবার চিঠি ইস্যু করা হবে। এরপরও যদি তারা তথ্য না দেয়, তাহলে সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কমিশনকে জানানো হবে। কমিশন এ বিষয়ে যে ব্যবস্থা নেবে আমরা সে অনুযায়ী কাজ করবো।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) একেএম নুর আহমদ পূর্বকোণকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি, শীঘ্রই তথ্য জমা দেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট