চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

যাত্রামোহন সেনের ঐতিহাসিক বাড়ি ভাঙার ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা

অনলাইন ডেস্ক

৬ জানুয়ারি, ২০২১ | ৫:২৫ অপরাহ্ণ

ব্রিটিশিবিরোধী আন্দোলনের পুরোধা যাত্রা মোহন সেনগুপ্তের (জেএম সেন) ও দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনের শতবর্ষী প্রাচীন বাড়ি ভাঙার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার (৬ জানুয়ারি) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদেশে ভবনটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে ঘোষণা করার কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সচিবসহ মামলার বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি (শিশুবাগ স্কুল ভবন) ভাঙার ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মাসুদ আলম চৌধুরী বাদী হয়ে রিট করেন।

রিটে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। প্রকাশিত সেসব প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জ এলাকার শিশুবাগ স্কুলের ভবন ভাঙা নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। গত ৪ জানুয়ারি দুপুরে ভবন ভাঙাকালীন দুই পক্ষকে মুখোমুখি অবস্থান নিতে দেখা যায়। পরে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত ও কাউন্সিলর শৈবাল দাস সুমনসহ বিভিন্ন জনের হস্তক্ষেপে ভবন ভাঙা স্থগিত রাখা হয়। যদিও এর আগেই স্কুলের বেঞ্চ-টেবিলসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি বের করে ভবনের ওপরের একাংশ বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। 

স্থানীয়দের দাবি- স্কুলটি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি। যা ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা যাত্রামোহন সেনগুপ্ত এই বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। চট্টগ্রামের এই আইনজীবীর ছেলে হলেন দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত। ব্যারিস্টার যতীন্দ্রমোহনও ছিলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেসের নেতা। তিনি কলকাতার মেয়রও হয়েছিলেন।

ইংরেজ স্ত্রী নেলী সেনগুপ্তাকে নিয়ে কিছু দিন ভবনটিতে ছিলেন তিনি। মহাত্মা গান্ধী, সুভাষ চন্দ্র বসু, শরৎ বসু, মোহাম্মদ আলী ও শওকত আলীসহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন সময় এই বাড়িতে এসেছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবীরাও এই বাড়ির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সূর্য সেন, অনন্ত সিংহ, অম্বিকা চক্রবর্তীর হয়ে মামলা লড়েছিলেন যতীন্দ্রমোহন। এতে ব্রিটিশ শাসকদের রোষানলে পড়ে ১৯৩৩ সালে কারাগারে মৃত্যু হয়েছিল যতীন্দ্রমোহনের। এরপর নেলী সেনগুপ্তা ১৯৭০ সাল পর্যন্ত রহমতগঞ্জের বাড়িটিতে ছিলেন। ১৯ গণ্ডা এক কড়া পরিমান জমিটি পরে শত্রু সম্পত্তি ঘোষিত হয়।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট