চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

আলোচনায় নেই বিদ্রোহীরা

ইফতেখারুল ইসলাম

৩ জানুয়ারি, ২০২১ | ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে ভাবছে না চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। যেকারণে গত শুক্রবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামের এমপি, মন্ত্রী এবং শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতাদের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি। বৈঠকশেষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। দলীয় প্রার্থী আছে। অন্যরা নিজস্ব প্রার্থী।

তার এই বক্তব্যের ইতিবাচক ইঙ্গিত পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। দলীয় মনোভাব যদি নির্বাচন পর্যন্ত থাকে তাহলে তারা বহিষ্কারের খড়গ থেকে বেঁচে যাবেন।

সদ্য সাবেক ১১ কাউন্সিলরের বিদ্রোহী হওয়া ও অনেক ওয়ার্ডে দল সমর্থিত প্রার্থীদের চেয়েও বিদ্রোহীদের জনসমর্থন বেশি থাকার কারণেই মেয়র পদে সব পক্ষকে পাশে পেতে চায় আওয়ামী লীগ। মূলত এই কারণেই বিদ্রোহীদের বিষয়ে নীরব থাকতে চায় আওয়ামী লীগ। নগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সাথে আলাপ করেও এরকম ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

তবে কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বিদ্রোহীদের বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। প্রয়োজনে বহিষ্কারের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত সভায় কোন কোন নেতা বিদ্রোহীদের বহিষ্কার না করে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার প্রস্তাব দেন।

চান্দগাঁও বোয়ালখালী আসনের সাংসদ ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ পূর্বকোণকে বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হল উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীকে নির্বাচিত করা। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে তাই মেয়র নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কাউন্সিলরদের নিয়ে কোন কথা হয়নি। দলীয় সূত্র জানায়, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থীদের সমর্থন দিলেও বিদ্রোহীদের থামাতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এমনকি কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা দফায় দফায় হুঁশিয়ারি দিলেও কাজে আসেনি। ফলে বাধ্য হয়েই এখন আর কাউন্সিলর নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না আওয়ামী লীগ। তাদের এখন মূল ফোকাস শুধুই মেয়র প্রার্থীকে নিয়েই।

এদিকে, সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রথমবারের মতো ৫৫ জনকে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে সবচেয়ে আলোচনার জন্ম দেয় গত নির্বাচনে জিতে আসা ১৯ জনের দলীয় সমর্থন না পাওয়া। তারা আবার দলে সক্রিয় রাজনীতিতেও আছেন। বঞ্চিতদের মধ্যে ১১ জন বিদ্রোহী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। কেবল তারাই নন, নগরীর পাঁচটি ওয়ার্ড ছাড়া অবশিষ্ট ৩৬টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত একাধিক প্রার্থী ভোটে লড়ছেন।

কাউন্সিলর পদে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন, ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডের সাহেদ ইকবাল বাবু, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের জহুরুল আলম জসীম, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের মোরশেদ আক্তার চৌধুরী, ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডে সাবের আহমেদ, ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডের এফ কবির আহমদ মানিক, ২৫ নম্বর রামপুরা ওয়ার্ডের এস এম এরশাদ উল্লাহ, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের এইচ এম সোহেল, ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ডের আব্দুল কাদের, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তারেক সোলায়মান সেলিম, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডের হাসান মুরাদ বিপ্লব।

উল্লেখ্য, স্থগিত থাকা চসিক নির্বাচনে নতুন করে ভোটের তারিখ ঘোষণা হয়েছে আগামী ২৭ জানুয়ারি। ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য কাউন্সিলর পদে ১৬১ এবং ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৫৬ প্রার্থী লড়ছেন।

 

পূর্বকোণ/পি-মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট