চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

কেন্দ্র কর্মকর্তারা এখনই ‘অসুস্থ’

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

৩ জানুয়ারি, ২০২১ | ১০:২০ পূর্বাহ্ণ

আসন্ন চসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য তদবির করে আসছেন বোয়ালখালী উপজেলার কয়েকজন প্রাইমারি স্কুলশিক্ষক। একই উপজেলার একাধিক ব্যাংকারও একইভাবে চেষ্টা করে আসছেন। অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে নাম বাদ দেওয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা-তদবির করে আসছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, ভোটগ্রহণের দিন হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অজানা শঙ্কা, ভয় ও ঝক্কি-ঝামেলা লেগে থাকে। এসব কারণে ভোটে দায়িত্ব পালনে অনীহা প্রকাশ করেছেন তারা। তবে নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি আদেশ মেনে চলতে বাধ্য। যৌক্তিক কারণ ছাড়া দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত থেকে নানাভাবে তদবির করে আসছেন অনেকেই। ভোট ঘনিয়ে আসায় এখন তদবির বেড়েছে। অনেক সময় অনাকাক্সিক্ষত ফোন পাওয়া যায়। এসব নিয়ে রীতিমতো বেকায়দায় রয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।

চসিক নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র হচ্ছে ৭৩৫টি। প্রতি কেন্দ্রে একজন করে প্রিসাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটকক্ষ থাকবে চার হাজার ৮৮৬টি। প্রতি কক্ষে একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও দুইজন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। সেই হিসাবে ৭৩৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং ১৪ হাজার ৬৫৮ জন সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। সবমিলে ১৫ হাজার ৩৯৩ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে। এরসঙ্গে আরও ৫ শতাংশ অতিরিক্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। সেই হিসাবে ২০ হাজার কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন। চট্টগ্রাম মহানগরী ছাড়াও আশপাশের ৫ উপজেলা থেকে তালিকা নেওয়া হয়েছে।

চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, দায়িত্ব পালনে ভয়-ভীতি বা আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করলে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রধানের মাধ্যমে যৌক্তিক কারণ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ লিখিত আবেদন করতে হবে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া কাউকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই।

গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৯ মার্চ ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ায় নির্বাচন স্থগিত করে কমিশন। আগামী ২৭ জানুয়ারি পুরোনো তফসিলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেছে ইসি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনেও ভোটগ্রহণের দিন হামলা-মারামারির ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও ইতিমধ্যে অনুষ্ঠিত কয়েকটি নির্বাচনে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব কারণে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে ভয় পাচ্ছি। এছাড়াও নির্বাচনের দিন আমাদের নিয়ে পরিবারও দুশ্চিন্তায় থাকে। তাই পরিচিতজনের মাধ্যমে নাম বাদ দিতে চেষ্টা করছি।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে ভয়ের কিছুই নেই। তারপরও অনেকেই নানা কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব পালন করতে অনীহা দেখায়। তাই বলে দায়িত্ব পালনে অযৌক্তিক অনীহার সুযোগ নেই।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার নয় লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন। মহিলা ভোটার নয় লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন।

 

পূর্বকোণ/পি-মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট