চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সার্কিট হাউসে মৎস্য সচিব

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দিয়ে সমুদ্রে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ জুন, ২০১৯ | ২:০৯ পূর্বাহ্ণ

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রইছউল আলম ম-ল বলেছেন, আমাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট) দিয়ে সমুদ্রে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করা হবে। সেন্ট্রাল অফিস থেকে জাহাজের অবস্থান ও গতিবিধি মনিটরিং করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নতুন প্রকল্পে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গতকাল (শনিবার) চট্টগ্রাম সার্কিট সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ’ প্রকল্পের বিভাগীয় কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি। বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় এই মেগাপ্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মৎস্য অধিদপ্তর। মৎস্য সচিব

আরও বলেন, সমুদ্রে জেলেদের নিরাপত্তায় নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নতুন প্রকল্পে মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়ন, মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, সমুদ্রের জীব-বৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষা ছাড়াও নৌবাহিনী-কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করা হবে।
সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, ৩৬৫ দিনের মধ্যে শুধুমাত্র ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। সমুদ্রের সম্পদ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় বৈজ্ঞানিক-গবেষকদের মতামতের ভিত্তিতে যা বন্ধ রাখা হয়েছে। মা ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২২ দিন বন্ধের পর সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিয়েছে মৎস্যজীবীরা।’ ৬৫ দিন বন্ধ থাকার সাময়িক ক্ষতিও পুষিয়ে নিতে পারবে বলে আশা করছি। সুন্দরভাবে বাঁচতে হলে ‘ইকো হেলথ সিস্টেম’ ঠিক রাখতে হবে। ব্রিডিং টাইমে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হলে লাভবান হবে মৎস্যজীবীরা।
তিনি বলেন, সাগরের সঙ্গে মোহনার আগ পর্যন্ত নদীতে মাছ ধরতে সরকারের কোনো বাধা নেই। ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ৪ বছর নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা জেলেদের জন্য কোনো সহায়তা চালু করতে পারিনি। তবে এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জেলেদের জন্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
মৎস্য সচিব আরও বলেন, আমাদের ১৬ লাখ জেলে আছে। এরমধ্যে কার্ডধারী আছে ১৪ লাখ। প্রতিটি জেলেকে মাসে ৪০ কেজি চাল দেওয়া হচ্ছে। ১২টি জেলার ৪২টি উপজেলায় ৪ লাখ ১২ হাজার ৫ শ টন চাল সহায়তা দিয়েছে সরকার। চাল বিতরণে স্বচ্ছতাও নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মৎস্য সচিব বলেন, প্রকল্পে জেলে পরিবারের জীবনমান উন্নত করা ও তাদের জীবনের নিরাপত্তার পরিকল্পনা রয়েছে। দক্ষতা বাড়াতে ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হবে। আমরা চাই না জেলের ছেলে জেলেই হবে। আমরা চাই জেলের ছেলেও স্কুলে যাক। পড়াশোনা করে সরকারি চাকরিজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হোক। দেশকে নেতৃত্ব দিক।
অনুষ্ঠানে প্রকল্পের সার সংক্ষেপ তুলে ধরেন প্রকল্প পরিচালক হাসান আহম্মেদ চৌধুরী ও উপ-প্রকল্প পরিচালক অধীর চন্দ্র দাশ।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) নুরুল আলম নিজামীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন মৎস্য বিভাগের মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. রাশেদুল হক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব তৌফিকুল আরিফ, চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ বজলুর রশীদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস এন্ড ফিশারিজের অধ্যাপক সাইদুর রহমান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মমিনুল হক, মেরিন ফিশারিজের উপ-পরিচালক আমির হোসেন, তাজউদ্দিন, মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা, আবদুস সালাম প্রমুখ।
সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলার মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা, অংশীজন, মৎস্য আহরণকারী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট