চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ব্যস্ত ও. আর. নিজাম রোডের উপরেই সেমিপাকা দোকান

ষ নজরে আসে না যথাযথ কর্তৃপক্ষের ষ নেপথ্যে প্রভাবশালীদের সহায়তা

ইমরান বিন ছবুর

১৬ জুন, ২০১৯ | ২:০৯ পূর্বাহ্ণ

নগরীর ও.আর নিজাম রোডে রয়েছে বাগমণিরাম ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিনের বাসা। তিনি সিডিএ’র প্রভাবশালী বোর্ড সদস্যও। তার চোখের সামনে এ সড়কের একাংশ এবং ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে সেমিপাকা দোকান। তার মত একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির চোখের সামনে এক মাস আগে গড়ে উঠা এসব অবৈধ দোকানের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মনে। এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারীদের অভিযোগ, সিডিএ’র একজন বোর্ড সদস্যের সদিচ্ছা থাকলে অন্তত তার বাড়ির সামনের সড়কটি অবৈধ দখলমুক্ত রাখা সম্ভব। কারণ নগরীতে একটি ইট বসাতেও সিডিএ’র অনুমোদন নিতে হয়। অনুমোদন না নিলে জেল যেতে হয়।
প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী দ্বিতীয়বার সিটি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে জিইসি মোড় হতে গোলপাহাড় মোড় পর্যন্ত সড়কটির সম্প্রসারণ করেন। তাতে এক লেনের সড়কটি দুই লেন হয়। কিন্তু এরপর সড়কটির প্রশস্ততা আর বাড়েনি। প্রশস্ততা বৃদ্ধির কোন উদ্যোগও নেয়নি কেউ। কিন্তু সড়কটিতে প্রতিনিয়ত চাপ বেড়েছে। এ কারণে সড়কের ফুটপাতেরও তথৈবচ অবস্থা। ও.আর নিজাম রোডের শ্মশানের বিপরীতে এক জায়গার মালিক ফুটপাত ও রাস্তার একাংশ দখল করে সেখানে

দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছে। দোকানদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসব দোকানের ভাড়া নগরীর নামীদামী শপিং সেন্টারের চেয়েও বেশি। প্রতি দোকানের মাসিক ভাড়া ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। ফুটপাতের পেছনের জায়গার মালিক এসব দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছে বলে জানান একাধিক দোকানদার। চৌকি, ভ্যান, ভাসমান দোকান ছাড়াও দেয়াল নির্মাণ করে সড়কের দুই পাশ দখল করেছে। এসব দোকানের মধ্যে রয়েছে- বাচ্চা ও মহিলাদের কাপড়ের দোকান, গার্মেন্টসের কাপড়ের দোকান, কসমেটিকস, খাবার ও জুতার দোকানসহ বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকান। এসব দোকানদার প্রথমে ফুটপাতে চৌকি কিংবা ভ্যানে ব্যবসা করলেও এখন অনেকে সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে এসব অবৈধ দখল নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরে হকারদের উচ্ছেদ অভিযানে প্রশাসনকে বিভিন্ন বাধার মুখে পড়তে হয় বলে জানান প্রিমিয়ার বিশ^বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের হাত করে এসব অবৈধ দখল চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পথচারীদের। এই সড়কটিতে যেদিকে পেরেছে ফুটপাত দখল করে রেখেছে। সড়কটি এমনিতেই সরু। মাঝে ডিভাইডার দিয়ে দুই লেন করার চেষ্টা করা হয়েছে। দুই পাশের ফুটপাত দখল হয়ে গেছে। সড়কের দুই পাশের বাণিজ্যিক ভবনের গাড়িগুলিও সারাক্ষণ সড়কের বড় একটি অংশ দখল করে রাখে। তাতে সড়কটি আরো সরু হয়ে যায়। অপরদিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ এই সড়কটি নিয়ে দিশেহারা অবস্থায় আছে। তারা কিছুদিন সড়কটিকে একমুখী যাতায়াত করে দেয়। কিছুদিন উভয়মুখী যাতায়াত করে দেয়। কিছুদিন সড়কের মাঝে প্লাস্টিকের ডিডাইডার দিয়ে দুই লেন ভাগ করে দেয়। এতসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেও তারা সন্তোষজনক ফল পাচ্ছে না।
জানতে চাইলে সিডিএ’র অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী মঞ্জুর হাসান বলেন, হকার বিষয়টি মূলত সিটি কর্পোরেশন দেখে। এরপরও সিডিএ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে। সিডিএ’র অনুমতি ছাড়া কোন ঘর বা ভবন নির্মাণ করার সুযোগ নেই উল্লেখ করে বলেন, যদি সিডিএ’র অনুমতি ছাড়া কোন স্থানে কোন দালান বা দেয়ালও যদি নির্মাণ করা হয়, আমরা ব্যবস্থা নিব।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মানুষ তার ব্যক্তি মালিকানায় ভবন নির্মাণ করতে পারে কিন্তু ফুটপাত বা সড়কে কখনো দোকান নির্মাণ করতে পারে না। এ ব্যাপারে আমাদের কেউ অভিযোগ জানায়নি। আমরা এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। কেউ যদি সড়কের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট