চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

অন্তঃসত্ত্বা রহিমার খুনি কে দুই বছরেও অজানা

নাজিম মুহাম্মদ

২৭ ডিসেম্বর, ২০২০ | ৬:২৯ অপরাহ্ণ

বাসার ভেতরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিলো তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিবি রহিমাল মৃতদেহ। গলায় ওড়না পেঁচিে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিলো রহিমাকে। তাঁর স্বামী এহতেশামুল পারভেজ সিদ্দিকী জুয়েল পেশায় আইনজীবী। ২০১৮ সালের ১ আগস্ট নগরীর চান্দগাঁও ফরিদার পাড়া এলাকায় নিজ বাসা থেকে রহিমা লাশ উদ্ধার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ।

দুই বছরের বেশি সময় পার হলেও হাত-পাঁ বাধা অন্তঃসত্ত্বা রহিমা হত্যার কোন কিনা হয়নি। কি কারণে কিংবা কেন এ খুনের ঘটান ঘটেছে তাও অজানা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিল নিহতের তিন বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান।বাসায় আর কেউ ছিলো না। এই ঘটনায় নিহতের মা বেদুরা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে চান্দগাঁও থানায় হত্যা মামলা করেন।

লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল নিহত রহিমা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাঁর হাত-পা ওড়না দিয়ে বাঁধা ছিল। মৃত্যুর পর তার হাত-পা বাঁধা হয়। এর আগে শ্বাসরোধ করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। তবে শরীরের আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না। শুধু নাক দিয়ে রক্ত পড়েছিল। মায়ের মৃুত্য কিভাবে হয়েছে শিশুটি কীভাবে তার মায়ের মৃত্যু হয় কিছুই আঁচ করতে পারেনি। ঘটনার দিন আইনজীবী জুয়েল পুলিশকে বলেছিলেন, বিকেলে স্ত্রী রহিমার লাশ খাটের পাশে ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি।

এ সময় খাটের উপর তার তিন বছরের কন্যা শিশু হৃদি বসে ছিলো। তার ঘর থেকে টিভি কার্ড লাগানো একটি মনিটর খোয়া গেছে। ঘটনার পর মামলাটি তদন্ত করেন করে চান্দগাঁও থানার পুলিশ। পরে এটি নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। সেই সময় মামলাটি তদন্ত করেছিলেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইলিয়াছ খান। তিনি বর্তমানে কক্সাবাজার এপিবিএনে কর্মরত।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গৃহবধূ রহিমা খুনের ঘটনায় সেই সময় বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছিলো। পরে বদলীজনিত কারণে আমি কক্সবাজার চলে এসেছি।

চান্দগাঁও থানা, গোয়েন্দা কার্যালয় ঘুরে মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই-মেট্টো)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক আনোয়ার উল্লাহ জানান, মামলাটি আমরা তদন্ত করছি। বেশ অগ্রগতিও আছে। তবে তদন্ত সফলভাবে সমাপ্ত করতে আরে কয়দিন সময় লাগবে।

মামলার বাদি ও নিহতের মা বেদুরা বলেন, পরিকল্পিতভাবে তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। যাতে কোনো চিহ্ন রাখা হয়নি। তাঁর দাবি খুনিরা পরিচিত কেউ। না হলে এভাবে দিনদুপুরে ঘরে ঢুকে কেউ খুন করে আবার বেরিয়ে যেতে পারে না। অপরিচিত কেউ খুন করলে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কেউ না কেউ দেখত।

আশপাশের বাসিন্দারা জানান ঘটনার দিন অপরিচিত কাউকে দেখেননি। ঘটনার বিষয়েও তাঁরা কিছুই জানেন না। পাঁচ বছর বয়সী শিশুটি এখনো তার মাকে খুঁজছে। সে জানে না তার মা আর ফিরে আসবেন না। মা বলে ডাকতে পারবে না। সে প্রতিদিনই মাকে খুঁজে। আর মা আসবে বলে তাকে সান্তনা দিয়ে রাখা হয়।শিশুটি বর্তমানে তার বাবার সঙ্গে রয়েছে।

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট