চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

যোগাযোগ খাতে বরাদ্দ বেশি

কক্সবাজার পর্যন্ত বুলেট ট্রেন চালু করবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

১৫ জুন, ২০১৯ | ২:০৫ পূর্বাহ্ণ

সরকারের চলমান উন্নয়নের অংশ হিসেবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত দ্রুত গতির বুলেট ট্রেন চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে গতকাল এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন এবারে বাজেটে যেসব খাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। একই সঙ্গে পর্যটন শিল্পে বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকায় এ খাতকেও ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবারের বাজেটে। প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশের অর্থনীতির ওপর ব্যাপক প্রভাব থাকায় পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এই খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে রেল মন্ত্রণালয়কে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার রেলওয়েকে একটি সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এখাতের উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। রেলওয়ের সার্বিক উন্নয়নে সরকার ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬-৪৫ পর্যন্ত ৩০ বছরব্যাপী মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। এই সময়ে ২৩০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে ১১২০টি নতুন যাত্রীবাহী রেলকোচ এবং ১১১০ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল রেল ট্র্যাক নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৫২ কিলোমিটার নতুন রেল ট্র্যাক নির্মাণের পাশাপাশি ১০০টি রেল ইঞ্জিন কেনা হবে। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে দ্রুতগামী বুলেট ট্রেন পরিচালনা করা যায় কি-না, এ বিষয়ে একটা সমীক্ষা করা হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রেলপথে ৩টা মেজর ব্রিজ নির্মাণ, তিনটি রেলওয়ে ওয়ার্কশপ নির্মাণ করা হবে। রেলের সিগন্যালিং ব্যবস্থার আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ই-টিকিটিং চালুর ফলে যাত্রীদের রেলভ্রমণ যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি মোবাইল অ্যাপস প্রবর্তনের ফলে বর্তমানে অতি সহজেই যাত্রীরা রেলের অবস্থান সম্পর্কে সহজে জানতে পারেন।’ তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কার, নতুন সড়ক নির্মাণ, উড়ালসেতু ও আন্ডারপাস নির্মাণ, সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ ইত্যাদি জনগুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে সমন্বিত ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপনে আমরা পদ্মা বহুমুখী সেতু, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল এবং ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ অনেকগুলো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের বরাদ্দ বেড়েছে ১৫ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা। আর ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করে এ খাতে ৬৪ হাজার ৮২০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মোট বাজেটের ১২ দশমিক ২ শতাংশ।
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে অনুন্নয়ন ও উন্নয়ন মিলিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগে ২৯ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা, সেতু বিভাগে ৮ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ১৬ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে ৩ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে ৩ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ৩ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন।
চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে এ বরাদ্দ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগে ২৩ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা, সেতু বিভাগে ৬ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ১১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে ৪ হাজার ২১৫ কোটি টাকা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে ১ হাজার ৭১ কোটি টাকা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ২ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট