চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

আধিপত্য বিস্তারে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপে গোলাগুলি

চকরিয়ায় ঘরে ঢুকে কাঁকড়া ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, চকরিয়া

১৫ জুন, ২০১৯ | ১:১৮ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ায় সশস্ত্র দুই বাহিনীর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বুধবার টানা ৯ ঘণ্টা থেমে থেমে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। গোলাগুলির পরদিন গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এক গ্রুপের লোকজন কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে আবদুল হামিদ (৩৫) নামে এক কাঁকড়া ব্যবসায়ীকে।
এ ঘটনায় ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটতে পারে আরো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। তবে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা রোধে পুলিশ টিম মোতায়েন করা হয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন। নিহত আবদুল হামিদ চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চরণদ্বীপ এলাকার আহমদ হোছনের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুর্গম উপকূলীয় এলাকা চরণদ্বীপ অপরাধীদের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন এলাকা থেকে দাগি অপরাধীরা চরণদ্বীপে গিয়ে নানা অপরাধ করে থাকে। নিকটবর্তী রামপুর ও চরণদ্বীপ মৌজায় বিশাল মৎস্যভা-ার থেকে লুট-ছিনতাইয়ের মাধ্যমে লাভবান হওয়ায় একাধিক সশস্ত্র গ্রুপ সৃষ্টি হয়। তাদের মধ্যে আবদুস সালাম ও বাহাদুর গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বুধবার বিকাল ৩টা থেকে গোলাগুলি শুরু হয়। ৫টার পর খবর পেয়ে থানার পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে দুই গ্রুপই সরে যায়। পুলিশ চলে আসার পর ফের তাদের মধ্যে শুরু হয় গোলাগুলি। ওই সময় দুই পক্ষের কেউ হতাহত হয়েছে কিনা জানা যায়নি।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অস্ত্রধারী ১০-১২ জন লোক বাড়িতে ঢুকে কাঁকড়া ব্যবসায়ী আবদুল হামিদকে প্রথমে কুপিয়ে জখম, পরে গুলি করে হত্যা করে। এই হত্যাকা- সালাম গ্রুপের লোকজন করেছে বলে দাবি করেছেন নিহত হামিদের স্ত্রী জোহরা খাতুন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। একই অভিমত থানার ওসি হাবিবুর রহমানেরও।
নিহত আবদুল হামিদের স্ত্রী জোহরা খাতুন বলেন, আমার স্বামী কোন গ্রুপের সাথে জড়িত নয়। সে কাঁকড়া ব্যবসা করে কোনরকমে পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিংড়ি ঘের থেকে কাঁকাড়া সংগ্রহ করে ঘরে ফেরার পরপরই সালাম বাহিনীর প্রধান আবদুস সালাম ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড এমরানের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ঘরে ঢোকে। তাদের মধ্যে হাবিবা বেগম নামের এক মহিলা ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করার পর সালাম ও এমরানের মধ্যে কোন একজন বুকে গুলি করলে আমার স্বামী হামিদ মারা যায়। হত্যার পরপরই সালামের নেতৃত্বে তার দলবল বীরদর্পে পালিয়ে যায়।
নিহত আবদুল হামিদের বড় ভাই আবদুল আজিজ দাবি করে বলেন, আবদুস সালামের সাথে আমাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এর জের ধরে আমার ভাইকে হত্যা করেছে।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, দুইদল সন্ত্রাসী লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে বুধবার বিকালে ওই দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। তিনি আরো বলেন, নিহত হামিদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। গোলাগুলিতে অংশ নেয়া দুই গ্রুপের লোকজনকেই গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান চলছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট